Friday, 1 December 2017

শম্ভুর উভয় সংকট ।

আমি শম্ভু কিন্তু রবিবার ঠাকুরের ঐ শম্ভু নয়। যার গায়ে অসম্ভব জোর, যে পালকির ভাঙা ডান্ডা খানা ছুঁড়ে ডাকাত যখম করে ফেলে ছিল।
আমি খুব গরীব রোগা শীর্ন, গায়ে তেমন জোর নেই। আমার মা আমাকে অনেক কষ্টে বড় করেছেন। ছোট বয়সে আমার বাবা মারা গিয়েছিল। মা সেই থেকে পরের বাড়ি কাজ করে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছ। আমি অনেকের ফাইফরমাশ খেটে আমার থেকে নিচু শ্রেণীর ছাত্র পড়িয়ে, বই খাতা যোগার করে লেখা পড়া শিখেছি। খাবার চেয়ে এনে খেয়েছি, সে বাসি পচা যা হোক। আমি মায়ের একমাত্র সন্তান, তাই চিন্তা ছিল যেমন করে হোক লেখা পড়া শিখে যেমন হোক একটা কাজ করে মায়ের কষ্ট দূর করব।
এভাবে কষ্ট করে আমি বি এ পাশ করলাম। এবার
কাজ খোঁজার পালা মায়ের কষ্ট দূর করতে হবে। অনেক চেষ্টা করে একটা কাজ যোগার করে ফেললাম। ভাগ্য একটু সহায় হলো, তাই আমি সরকারি অফিসে পিওনের কাজ পেলাম। স্থায়ী চাকুরী, এবার মা কে বললাম তুমি কাজ ছাড়ো। মা হ্যাঁ আমি কাজ ছাড়ব তুই বাবু বেতন পেতে শুরু কর। আমি কাজ ছেড়ে দেব। মা কথা রাখলেন আমি বেতন পেতে শুরু করলাম মা কাজ ছেড়ে দিলেন। এবার আর এক লড়াই হুমরি খাওয়া মাটির ঘর ফেলে নতুন ঘর করতে হবে। চাকরি করার দুবছর পর আমি সামান্য হলেও ইঁট বালি সিমেন্ট কিনে শুরু করলাম পাকা ঘর করা। মা খুব খুশি, তিন টি ঘর কল পায়খানা করলাম। এসব করতে প্রায় সাত আট বছর সময় লেগে গেল। আমার ভিটের জমি অনেক টা তাই ঘিরতে বা প্রাচীর দিতে পারলাম না। মা ওদিকে মেয়ে দেখা শুরু করেছেন আমার বিয়ে দেবেন বলে। আমি যত বলি এখন বিয়ে করব না, তত রেগে যান। কিছু করার নেই, অগত্যা রাজি হলাম।
কিন্তু মেয়ে পাওয়া কঠিন হলো কারণ আমার বাংলাদেশ থেকে এসেছি, আর আমার বাবা মিথ্যা অভিযোগে জেল খেটে ছিল। সেই লজ্জায় সে আত্মহত্যা করে ছিলেন। এসব ঘটনা শোনার পর কোন বাবা রাজি হচ্ছে না। পাতুর গ্রামের এক পরিবার সব শুনেও রাজি হল। আমি মা কে বললাম নিশ্চয়ই কোন গলদ আছে। মা বলেন কেউ যখন রাজি হচ্ছে না, এরা রাজি যখন তোকে এখানেই বিয়ে করতে হবে।
শম্ভু পরেছে উভয় সংকটে। তার কি বিয়ে করা উচিত।

No comments:

Post a Comment