পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শিক্ষক দের চাঁদা না দেওয়া নিয়ে ভীষণ হৈচৈ হচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদ পত্রে লেখা লেখি হচ্ছে। কিছু জায়গায় সরকারি অফিসার রা নোটিশ দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। যেমন সিঙ্গুর ব্লকের কামার কুণ্ড চচক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক হোয়াটস এ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে বলছেন, চাঁদা দেওয়াটা যেন বাধ্যতামূলক, কিন্তু আমি যতদূর জানি এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল প্রায় চল্লিশ বছর আগে, তখন শিক্ষকের চাঁদা ছিল না। আমি দেখেছি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কোন চাঁদা লাগতো না। তারপর দশ টাকা চাঁদা নেওয়া শুরু হয়। এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যে স্তর থেকে ছাত্র ছাত্রীরা পঞ্চায়েত স্তরে বা অন্য স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, সেই বিদ্যালয় স্তর ছিল
বরাবরের জন্য উপেক্ষিত। কোন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকদের চাঁদায় খেলা হতো। পুরস্কার দেওয়া হতো, কিন্তু বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় চুন পর্যন্ত কিনত না। পঞ্চায়েত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পঞ্চায়েত খরচ করত খেলা ম্যারম্যার করত, এই খেলার যৌলস আনতে পঞ্চায়েত স্তর থেকে চক্র স্তর পর্যন্ত এমনকি মহকুমা ক্রীড়া পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া শুরু হলো খেলা টাকে উৎসবে পরিনত করা হলো। সেই যে শুরু হয়েছিল সেটাই এখন বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে, কিন্তু এই ছাত্র ছাত্রীরা যেই মাধ্যমিক স্তরে ভর্তি হলো তারপর কোন কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করে ফেলল তো তাদের ছাড়। মাধ্যমিক স্তরের না আছে পঞ্চায়েত স্তর না চক্র স্তর না আছে মহকুমা স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। বিদ্যালয় স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অভিভাবক দের থেকে বা ছাত্র ছাত্রীদের থেকে খেলার ফিস নেওয়া হয়। শিক্ষকদের কোনো চাঁদা লাগে না। প্রাথমিক শিক্ষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে প্রশাসন কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোর সময় ছাড়। আমার মাঝে মাঝে অবাক লাগে হাজারো কাগজ ফর্ম পূরণ করতে হবে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করতে হবে, বিনা টাকায় সিসিই পরীক্ষা করতে হবে। সর্ব ধরনের চাপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর। মাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলো সরকার পোষিত নয়! তারা নিজেরাই নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে তাদের কমিটির মাধ্যমে। এখন তো অনেক বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির কোন অস্তিত্ব নেই। কারণ অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হয় না। জানি না আমাদের মতো এদের বিদ্যালয় পরিদর্শক বা এ আই আছে কি না? এরা পশ্চিম বঙ্গের সরকারের অধীনে আছে না নেই। যদি থাকে তাহলে ভর্তি করতে এতো টাকা নেওয়া হয় কেন। কোথাও সব থেকে কম পাঁচ শো টাকা কোথাও সর্বোচ্চ হাজার টাকা। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি তো দূর পরীক্ষা বা মূল্যায়নের জন্য এক টাকাও নেওয়া যাবে না। বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য এক টাকাও নেওয়া হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা তাদের পকেট থেকে দেন । কি সুন্দর একই রাজ্যে দু শিক্ষা ব্যবস্থা একটা সরকারের অধীনে কিন্তু টাকা পয়সা খরচের বা সর্ব দিক থেকে আলাদা। বেতন ফারাক বলছি না। আমি জানি না মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার বেতন থেকে বিদ্যুৎ বিল দেয় কিনা! আরো অনেক কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু আর লিখছি না। সকলে পড়বেন মন্তব্য করবেন।
No comments:
Post a Comment