Wednesday, 27 December 2017

আজব দেশ।

আমার খুব মনে আছে যোগীন্দ্র নাথ সরকারের লেখা "মজার দেশ"। লেখকের নাম এবং কবিতার লাইন ভুল হলে মার্জনা করবেন। এক যে ছিল মজার দেশ সব রকমে ভালো। রাত্রিতে বেজায় রোদ, দিনে চাঁদের আলো।। ছিল এই লাইন গুলোও ঘুড়ির হাতে বাঁশের লাটাই উড়তে থাকে ছেলে। বঁড়শিতে মানুষ গেঁথে মাছেরা ছিপ ফেলে।
আমাদের দেশ ভারত বর্ষ আজব দেশ। যত ধর্ম তত রকম আইন। যাদের জন্য এই দেশ তাদের জন্য আইন কী কঠোর। সর্ব দিক দিয়ে, তাদের সমাজে এখনও উচ্চ নীচ ভেদা ভেদ খুব কঠোর। এই ভেদা ভেদের ফাঁক দিয়ে অন্য ধর্ম থাবা বসাছে। উচ্চ বর্ণের মানুষ এখনো সচেতন না হলে একদিন নিজ দেশে পরবাসি হয়ে যাবেন। এ কথা সকলে মানবেন কি না জানি না, যে দেশ ভাগ হয়ে ছিল ধর্মের ভিত্তিতে। আর সংবিধান রচনার সময় হয়ে গেল ধর্ম নিরপেক্ষ। সংখ্যা লঘুরা থাকবেন তাদের ধর্ম তারা পালন করবেন, এটাও ঠিক কিন্তু তাদের আলাদা আইন আর সংবিধানের আইন শুধু সংখ্যা গুরুরা মেনে চলবে। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও চিন্তা ভাবনা হবে না। এক সম্প্রদায়ের মানুষ জন সংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটাবেন আর ক্রমশ দেশের চাষ যোগ্য জমি বসত বাড়ীতে পরিবর্তন হয়ে যাবে।এখনি দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ খেতে পায় না। তাহলে কিছু বছর পর এই না খেতে পাওয়া মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। যারা ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে এত ভাবেন আমার তো মনে হয় তারা আসলে ধর্ম নিরপেক্ষ নয়। শুধু মাত্র ভোটের রাজনীতি করেন। সব দলের ভেবে দেখা উচিত ভোটের রাজনীতি ছেড়ে দেশের গরীব মানুষের মঙ্গল। সব দল তো দেশের মানুষের ভালো চায় হয়তো ভাবনা বা মত পথ আলাদা। কোনো দল বা সম্প্রদায়ের লোক কে আঘাত করার জন্য নয়। সব রাজনৈতিক দলের কাছে আমারা আশা করা কি অনুচিত? না হলে তো আলেকজান্ডারের সেই বিখ্যাত উক্তি "সত্য সেলুকাস কী বিচিত্র এই দেশ।"  আমাদের দেশের
ধর্ম যখন রাজনীতির ভিত্তি, কোন কোন দল ধর্ম নিরপেক্ষতা করে করে কোনো না কোনো ধর্ম কে তোলাই দেয় ভোটের জন্য। আবার কেউ সরাসরি ধর্মের কথা বলে। সব দলকে অনুরোধ সকলে দেশের মানুষের ভাবুন।

Friday, 22 December 2017

নারকেল কুঁড়োর মামলা।

ঘটনা এমন যে একটি নারকেল নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। কোথায় জায়গাটির নাম এখন আমার ঠিক মনে নেই। পৃথিবীতে কত ধরনের মানুষ থাকেন যারা অপরের সঙ্গে পায়ে পা দিয়ে ঝামেলা করে, আর মারা মারি ঝগড়া করার করার জন্য ওৎ পেতে থাকে। অপরাধ করে অস্বীকার করে, আর কিছুতেই অপরের ভালো দেখতে পারেন না। কিছুতেই নিজের দোষ দেখতে পায় না।
এরকম একজন ছিলেন পার্বতী পিসি, পাড়ার লোকজন তার নাম রেখে ছিল ঝামেলা পিসি। তারি পাশের বাড়িতে থাকত আরেক জন সুবলা পিসি। পাড়ার লোকজন নাম দিয়ে ছিল ঝঞ্ঝা পিসি। সত্যি বলতে কি এই দুজনের গ্রামের লোকজন কে ঝগড়া করে হারিয়ে দিত। কেউ এদের সাথে ঝগড়া করে পারত না। ঝগরুটে এরকম দুই মহিলার একটা ঘটনা ঘটে গেল, সুবলা পিসির একটি নারকেল গাছ ছিল। আর সুবলা পিসির বছর দশেকের একটি ছেলে আর পার্বতী পিসির এক ছেলে ও এক মেয়ে।
এক দিন সকালে পার্বতী পিসি নারকেল কুঁড়ো তিন টি ছেলে মেয়ে কে মুড়ি খেতে দিয়েছে।
সুবলার ছেলে কেও দিয়েছে, আর যায় কোথায় সুবলা ধরেছে তুই নারকোল পেলি কোথায়? পার্বতী যত বলে আমার বাপের বাড়ি থেকে এনেছি। সুবলার গলার জোর তত বাড়ে, তুই মিথ্যে বলছিস। ঝামেলা পিসিও কম আরম্ভ করে দিয়েছে। সুবলা তো তার বাচ্চা কে মুড়ি খেতে দিলে না। কেড়ে নিয়ে টান মেরে ফেলে দিল। ঝামেলা পিসির ছেলে মেয়ে হতবম্ব কি করবে বুঝতে পারছে না। ও দিকে দু মা মিলে তুমুল ঝগড়া করছে। কেউ কাউকে ছাড়বার পাত্র নয়। সুবলার ছেলে ভয়ে পালিয়ে বাবার কাছে ছুটেছে, যেখানে বাবা জমিতে কাজ করছিল। এদিকে তো ঝামেলা আর ঝঞ্ঝা মুগুর যুদ্ধ করছে। করছে পার্বতীর ছেলে মেয়ে দুটো পালিয়েছে।
সকল গ্রামের লোকজন ও ওদের স্বামীরা আসার আগেই সুবলা পিসি একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলল। ঝামেলা পিসির মাথায় মুগুর লেগে গেছে বা মেরে দিয়েছে। রক্ত বেড়তে দেখে পালিয়ে গেছে। পাড়ার লোকজন থানায় খবর পাঠিয়ে ছিল। ইতিমধ্যে থানা থেকে পুলিশ এসে হাজির, ঝামেলা পিসি কে হসপিটাল পাঠানো হলো। আর ঝঞ্ঝা পিসি কে ধরে নিয়ে গেল, তখন ঝঞ্ঝা পিসি কাঁদতে কাঁদতে বলছে আমি ইচ্ছা করে মারিনি লেগে গেছে। পুলিশ ওসব কথা শুনল না, নিয়ে চলে গেল। কিছু দিন পর সুবলা জামিন পেল বাড়িতে এল। পাড়া ঠান্ডা হলো কিন্তু সেই মামলা বা কেস এখনও চলছে।

Sunday, 17 December 2017

শম্ভুর সংকট ।

বন্ধুরা আমি ভেবেছিলাম আপনারা শম্ভুর জীবন কাহিনী পড়বেন, এবং লিঙ্কে কমেন্ট করবেন। কিন্তু না সে কমেন্ট পেলাম না। অবশ্য খুবই অল্প সংখ্যক বন্ধু লাইক করেছেন, সেই সকল বন্ধুকে ধন্যবাদ। আমার লেখা পড়ে হয়তো কার ভালো লাগে নি। আশায় রইলাম আপনারা পড়বেন ও মন্তব্য করবেন কেমন।
শম্ভু এত কিছুর পর কী করে ছিল। বা কী করা উচিত ছিল সে ব্যাপারে শম্ভু যা করেছে সেটা ঠিক কিনা? এসব প্রশ্ন রয়ে গেল।
আগেই বলেছি আমি শম্ভু আমি খুব গরীবের ছেলে। তাই আমার কথা লিখব আমার গৃহীনীর ব্যপারে আমি কী সিদ্ধান্ত নিলাম, সেটাই লিখব বা বলব। দেখুন আমি জানি না আপনারা কী আমি জানি গর্ভের সন্তান আমার নয়, তবু আমি তাকে গর্ভাবস্থায় তাড়িয়ে না দিয়ে এবং গর্ভপাত না করে আমার কাছে রেখে দিলাম। ছেলের জণ্ম হল। এর ঠিক পাঁচ বছর পর যখন বললাম আরেকটি সন্তান হোক, তখন আবার বাহানা শুরু হলো। এ রকম করে আরো দু বছর পর এক জৈষ্ঠ মাসে বাবার বাড়ি থেকে ষষ্ঠ সেরে ফিরে রাজি হলো। আমি হ্যাঁ বললাম যা হোক দু জন নতুন প্রাণের জণ্ম হলো। দুটি সন্তান সহ আমার কাছে রইল বড়ো হলো। লেখা পড়া হলো বড়ো হলো, আমার যে বংশ সেটা থেমে গেল। ওদের কে দত্তক পুত্র বলে মেনে নিয়ে আছি। আমি নপংসুক নই, আমাকে রীতিমত ঠকিয়ে কীভাবে আছি আমি জানি। আমার দুটি সন্তান গর্ভে এসেছিল, কিন্তু দুটি কেই গর্ভপাত করিয়ে এল। একটি তো আমার বিনা অনুমতি তে। আমার কি করণীয় এখনও বুঝে উঠতে পারি নি। আপনাদের মতামতের আশায় রইলাম। আশা করি মতামত দেবেন।

Thursday, 7 December 2017

শম্ভুর দ্বিতীয় সংকট।

বিয়ে করার আগে আমার জীবনে একটা অঘটন ঘটে গেল। আমার মা আমাকে ছেড়ে চলে গেলেন চিরকালের জন্য। ছোট্ট থেকে বাবা কে পাইনি মা ছিলেন আমার সব, সেও আমাকে একা করে দিয়ে একদিনের জ্বরে পৃথিবী ছেড়ে চলে চলে গেলেন। জানি সকল কে একদিন না একদিন পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যেতে হবে।
কিন্তু মায়ের মৃত্যু টা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না।
যা হোক আমি মায়ের কথা রাখতে ঐ মেয়ে কে বিয়ে করে আনলাম। কিন্তু বিয়ের দিন থেকে ফুলশয্যার পর্যন্ত অনেক ঘটনা চোখে পড়ল সে গুলো বলবার নয়। ফুলশয্যার দিন প্রায় সকাল থেকে একটি ছেলে আমার বাড়ি তে এল সে নাকি বৌ এর মেজ বৌদির ভাই। ছেলেটি কে আমি নজর রাখ ছিলাম তার চাল চলন এবং কথা বার্তা অন্য রকম। আমার নব বিবাহিত বৌ এর আচরণ পাল্টে গিয়ে ছিল সে আসার পর। ছেলে টি দুপুরে রইলো ভাত খেল, সন্ধ্যা হলে নব বধূর বসার ব্যবস্থা করা হলো। ছেলে টি বৌ এর পাশে গিয়ে বসল। কিছুক্ষন পর দেখি সে আমার নব বিবাহিত বৌ এর উরু বা জঙ্ঘা কাছে হাত দিয়েছে। হাত বোলাছে যা দেখে আমার ভালো লাগেনি। আমি কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। কিছু বলতে পার ছিলাম না, বাড়ি ভর্তি আত্মীয় স্বজন যা দেখেছি বলি তবে আমারি অপমান হবে। একটা গণ্ডগোল শুরু হয়ে যাবে, কি করব ভেবে ঠিক করতে পারছিলাম না। আপনারা বলুন ঐ সময়ে আমার কি করার ছিল?
যাহোক আমি ফুলশয্যার পর রাতে বুঝতে সহবাসের সময় বুঝতে পারলাম ও আগেই আরেক জন কে সব দিয়ে বসে আছে। ফুলশয্যার দুদিন পর ছেলেটি আবার আমার বাড়ি তে এল। সে চলে যাবার পর বৌ কে জিজ্ঞেস করলাম ছেলে টি কে শুধু বলল ও আমার মেজ বৌদির ভাই। আমি যখন প্রশ্নের পর পর প্রশ্ন করে যাচ্ছি সে চিৎকার করে ওঠে বলে ওরে বাবা কত ভালো ছেলে জান। তুমি কার নামে কি বলছ? আমি খারাপ কোন কথা বলিনি। ওর ঐ লাফিয়ে উঠে সরে যাওয়া দেখে আমার সন্দেহ আরও বেড়ে গেল।
যা হোক ছেলে টি আমার বর্তমানে এবং অবর্তমানে বাড়িতে আসত। মাঝে মাঝে সন্তান নেওয়ার কথা বললে এড়িয়ে যেত, কিন্তু ঠিক বছর দেড় বাদে একদিন নিজেই সন্তান নেওয়ার জন্য রাজি হয়ে গেল। আর এই সন্তান নেওয়ার পনেরো দিন আগে ছেলে টি বাড়িতে এসে ছিল। আমি যখন বলছিলাম রাজি হয়নি। যেই ছেলে টি এল তখন রাজি হল। আমার সন্দেহ বেড়ে গেল প্রতিদিনই একটা কথা বলত তোমার সন্তান। একদিন খুব রেগে গিয়ে চেপে ধরতে ছেলেটি সম্পর্কে সব বলল ও হচ্ছে ওর পূর্ব প্রেমিক, বিয়ের আগে ওর সাথে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর নাকি কিছু করেনি, ভাবুন যে বিয়ের আগে সহবাস করেছে সে বিয়ের পর কিছু করেনি। আবার আমার অবর্তমানে বাড়িতে এসেছে। পুরো ব্যাপারটা বলল আমি লিখিত দেব তবে তোমাকে নয়। ঠিক হল যারা উপস্থিত থেকে আমার বিয়ে দিয়ে ছিলেন তাদের একজন কে আনতে হবে। একটি দিন তিনি এলেন, তখন ঘরে ঢুকে লিখতে শুরু করল। এমন সময় হঠাৎ সেই ছেলেটি এসে হাজির। ঘর বৌ রানি বেড়িয়ে এলেন তাকে বলল সব জানতে পেরেছে তুমি আর এস না। ছেলেটি জিভ কেটে চলে, তারপর জানি না আমার অনুপস্থিতিতে আর এসেছে কিনা। লেখা শেষ হলে বৌ রানি লেখাটা যিনি এসেছিলেন তার হাতে দিলেন। তিনি সব পড়ে বলেন আমার বাড়িতে তোমার বাবার বাড়ির সকল কে ডাকচ্ছি। তোমারা দুজন ঐ দিন যাবে। তখন বৌ রানি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এবার বলুন আপনারা আমার কী করা উচিত ছিল? দয়া করে আমার প্রোফাইলে লিঙ্ক খুলবেন পড়বেন এবং অবশ্যই মন্তব্য করবেন। আমি আশায় থাকলাম।

Monday, 4 December 2017

সুপ্রভাত বন্ধুরা।

আমার সকল ফেসবুক বন্ধুদের শুভ সকাল ।সকল ফেসবুক বন্ধুকে সুপ্রভাত ।আবার একটি নতুন দিনের সূচনা হলো।

Friday, 1 December 2017

শম্ভুর উভয় সংকট ।

আমি শম্ভু কিন্তু রবিবার ঠাকুরের ঐ শম্ভু নয়। যার গায়ে অসম্ভব জোর, যে পালকির ভাঙা ডান্ডা খানা ছুঁড়ে ডাকাত যখম করে ফেলে ছিল।
আমি খুব গরীব রোগা শীর্ন, গায়ে তেমন জোর নেই। আমার মা আমাকে অনেক কষ্টে বড় করেছেন। ছোট বয়সে আমার বাবা মারা গিয়েছিল। মা সেই থেকে পরের বাড়ি কাজ করে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছ। আমি অনেকের ফাইফরমাশ খেটে আমার থেকে নিচু শ্রেণীর ছাত্র পড়িয়ে, বই খাতা যোগার করে লেখা পড়া শিখেছি। খাবার চেয়ে এনে খেয়েছি, সে বাসি পচা যা হোক। আমি মায়ের একমাত্র সন্তান, তাই চিন্তা ছিল যেমন করে হোক লেখা পড়া শিখে যেমন হোক একটা কাজ করে মায়ের কষ্ট দূর করব।
এভাবে কষ্ট করে আমি বি এ পাশ করলাম। এবার
কাজ খোঁজার পালা মায়ের কষ্ট দূর করতে হবে। অনেক চেষ্টা করে একটা কাজ যোগার করে ফেললাম। ভাগ্য একটু সহায় হলো, তাই আমি সরকারি অফিসে পিওনের কাজ পেলাম। স্থায়ী চাকুরী, এবার মা কে বললাম তুমি কাজ ছাড়ো। মা হ্যাঁ আমি কাজ ছাড়ব তুই বাবু বেতন পেতে শুরু কর। আমি কাজ ছেড়ে দেব। মা কথা রাখলেন আমি বেতন পেতে শুরু করলাম মা কাজ ছেড়ে দিলেন। এবার আর এক লড়াই হুমরি খাওয়া মাটির ঘর ফেলে নতুন ঘর করতে হবে। চাকরি করার দুবছর পর আমি সামান্য হলেও ইঁট বালি সিমেন্ট কিনে শুরু করলাম পাকা ঘর করা। মা খুব খুশি, তিন টি ঘর কল পায়খানা করলাম। এসব করতে প্রায় সাত আট বছর সময় লেগে গেল। আমার ভিটের জমি অনেক টা তাই ঘিরতে বা প্রাচীর দিতে পারলাম না। মা ওদিকে মেয়ে দেখা শুরু করেছেন আমার বিয়ে দেবেন বলে। আমি যত বলি এখন বিয়ে করব না, তত রেগে যান। কিছু করার নেই, অগত্যা রাজি হলাম।
কিন্তু মেয়ে পাওয়া কঠিন হলো কারণ আমার বাংলাদেশ থেকে এসেছি, আর আমার বাবা মিথ্যা অভিযোগে জেল খেটে ছিল। সেই লজ্জায় সে আত্মহত্যা করে ছিলেন। এসব ঘটনা শোনার পর কোন বাবা রাজি হচ্ছে না। পাতুর গ্রামের এক পরিবার সব শুনেও রাজি হল। আমি মা কে বললাম নিশ্চয়ই কোন গলদ আছে। মা বলেন কেউ যখন রাজি হচ্ছে না, এরা রাজি যখন তোকে এখানেই বিয়ে করতে হবে।
শম্ভু পরেছে উভয় সংকটে। তার কি বিয়ে করা উচিত।

Sunday, 26 November 2017

শুভ সকাল। Good morning.

সকল ফেসবুক বন্ধুদের শুভ সকালের শুভেচ্ছা জানাই। তোমা সবার আজকের দিনটা ভালো কাটুক।

Friday, 24 November 2017

আজকের কাগজে দুটি খবর।

প্রথমত এবেলা ইন এ পড়লাম, কন্যা সন্তান জন্ম দেবার জন্য বধূ নির্যাতন। এটি ঘটেছে বাগুই আটির জোড়া মন্দির তলায়। আজকের এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। কাউকে নাড়া দেয় না, জানি না। কিন্তু জানতে হবে যে কন্যা সন্তান কোনো অংশে কম নয়। আজকের দিনে এটা খুবই খারাপ খবর, যখন পশ্চিমবঙ্গে ছেলে দের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা কম। যদিও অন্য অনেক রাজ্যের থেকে বেশি। যে টুকু কম তাতেই নাবালিকা বিবাহ করতে বাধ্য হচ্ছে, এই রাজ্যের নাবালিকা বিবাহ বেশি। কন্যা সন্তানের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দুটি প্রকল্প চালু আছে, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এবং কন্যাশ্রী। তবুও মানুষ সচেতন নয়, কারণ সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করতে এটা খুবই জরুরি।
আর একটি খবর পড়লাম 24 ঘন্টার খবর দেখে শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন, ইংরেজি শেখানো জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। খুবই ভালো খবর, আমি আজ এখানে একটু অন্য কথা বলছি। কিছু মনে করবেন না, অন্য ভাবে নেবেন না। বাম আমলের শেষে এসে প্রথম শ্রেণী থেকে ইংরেজি চালু হয়েছিল। তখন শিক্ষক দের প্রশিক্ষণ শিবির হয়ে ছিল, কোনো এক বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে। তখন প্রথম শ্রেণীতে পড়াবার মতো একটা বই ছিল। বই টি অল্প পাতার, তাতে কিছু ত্রুটি ছিল। এখন আমার বই এ পড়ার মতো ইংরেজি নেই যে টুকু আছে তাঐ বয়সের বাচ্ছারা অনেক আগেই শিখে এসেছে। মনে রাখতে হবে এখন কার প্রাক প্রাথমিক তখন প্রথম শ্রেণী ছিল। আর দ্বিতীয় শ্রেণির আমার বই এর ইংরেজি প্রথম শ্রেণীর আমার বই এর সঙ্গে মেলে না। দু একটা বাক্য আর শব্দ এই ইংরেজি পড়ে তারা যখন তৃতীয় শ্রেণিতে এল তখন পড়ে অথৈ জলে, এমন বড়ো বড়ো গল্প ইংরেজিতে পড়তে হয় যে অনেক ছাত্র ছাত্রী ভয় পেয়ে যায়। তার যা শব্দ চয়ন সত্যিই দূর্লভ। ছাত্র ছাত্রী রা উচ্চারণ করতে পারে না।
আগে বই পাল্টাতে হবে, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণী থেকে ইংরেজি চালু করতে হবে। আর সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে বাঁচাতে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। প্রোজেক্টর দিতে হবে, ইংরেজি ভাষা শিক্ষার অনেক গ্যাজেট আছে সে সবের ব্যবস্থা করতে হবে। বিদ্যালয় গুলিতে বিনা খরচে বিদ্যুৎ  দিতে হবে। কম্পিউটার দিতে হবে। শুধু বাম আমলের মতো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে টাকা খরচ করে কি লাভ? বাম আমলে এই প্রশিক্ষণ গুলো হতো ক্যাডার মাস্টার দিয়ে, গুরুপ করে বসো আলোচনা করো বল। খাও ও বাড়ি যাও। স্কুল কম শিক্ষক তবুও প্রশিক্ষণের নামে পড়াশোনা লাটে উঠত। এখন এই সরকার ও শুরু করেছে সেই ব্যবস্থা। দয়া করে আগে গোড়ায় গলদ দূর করুন।

Thursday, 23 November 2017

শুভ সকাল।

আমার সকল ফেসবুক বন্ধুদের শুভ সকাল সকালের শুভেচ্ছা রইলো। পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি সকলের যেন দিনটা শুভ হয়।

আমার পঞ্চাশ বছর।( ২য় অংশ)

এর আগে আমি আমার ব্লগে লিখেছি আমার পঞ্চাশ বছর জীবনের অভিজ্ঞতা। কারণ আমার ব্যক্তিগত জীবনটাই একটা নাটক, হয়তো অনেকর ভালো লাগছে না। কিন্তু কী করি বলুন, আগে অন্য বিষয়ে কিছু লিখেছি। আমার ব্লগে কেউ পড়েছন বলে মনে হচ্ছে না। আমি সবটাই লিখছি আমার ব্যক্তিগত অভিমত অভিজ্ঞতা থেকে। আমার এই দুঃখের কথায় কেউ যদি সুযোগ খোঁজেন কিছু করার নেই। কারোর ভালো লাগছে না। তবে সবটাই সত্যি কথা, কারণ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আর জণ্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, মানুষের জীবন নিয়ন্ত্রণ করে রাজনীতি।যেমন আমি দেখেছি আমাদের পরিবার ছিল রাজনৈতিক দল দ্বারা আক্রান্ত যখন যে দল ক্ষমতায় তখনই সে তার ক্ষমতা দেখিয়েছে। আগেই লিখেছি আমার বাবার বেতন বন্ধ ছিলো 1971 সালে, আবার 1986 থেকে 1988 পর্যন্ত প্রায় দু বছর। অথচ 1986 থেকে 1988 প্রতিদিনই আমি নিজে স্কুলে পৌঁছে দিয়েছি। পেছনে কারণ সেই রাজনীতির। যাহোক আরও অনেক কিছু লেখার আছে। তবে নীচের পুরনো দলিলের টুকরো অংশ দিলাম যেটি বাংলাদেশের বরিশালের নলচিরা গ্রামের গৌরনদী থানার অন্তর্গত ।আমার বাবার বা আমার বংশ পরিচয় জানার জন্য। এমন কেউ থাকেন যিনি ঐ নাম চেনন। তাহলে আমার ফেসবুকে লিখবেন এই আশায় রইলাম। এর আগেও আমি "আমার কথা" শিরোনামে লিখেছি তবুও যেন শেষ হয় নি। কারণ আগেই বলেছি আমার জীবনে ঘটে যাওয়া প্রতি টি ঘটনা স্মরণীয়। তবে সমাজে ভালো মন্দ মানুষ থাকেন। প্রতিবেশী রা প্রতিবেশী না হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু অনেক ভালো মানুষ ছিলেন না হলে আমরা হয় তো বেঁচে থাকতাম না। আমার কথায় লিখেছি, আজ আবার লিখছি। আমার মায়ের কাছে শুনেছি আমার জণ্ম হয়ে ছিল। বাংলা ১৩৭০ বা ১৩৭১ সালের ২৯ শে মাঘ ইংরেজি সাল টা ঠিক বলেছ বলে মনে পড়ছে না। সাল টা মা ঠিক বলতে পারেন নি। কিন্তু তারিখ টা মনে হচ্ছে ঠিক। যাই হোক বর্তমানে আমার বয়স পঞ্চাশ পার হয়েছে। তাই শিরোনামে আমার পঞ্চাশ বছর, এই পঞ্চাশ বছরের স্মৃতি থেকে আমার এবং আমার পরিবারের সুখ দুঃখের কথা সবার সাথে ভাগ করে নেব। আগেই লিখেছি দুঃখের কথায় মানুষ সুযোগ খোঁজেন। আবার অনেকে অপরের দুঃখে আনন্দ পান। 


আবার এরকম একটা কথা আমি শুনেছি ভারাক্রান্ত মন কে হাল্কা করে নেওয়া যাবেয়। তাই  আজ আমি আমার জীবনের সকল সুখ দুঃখের কথা লিখে যাব। প্রথম আমি বলি আমার যখন একটু জ্ঞান হলো আমি বুঝতে শিখলাম, তখন থেকে অভাব আর অভাব বাড়িতে প্রতিদিন খাবার জুটত না।    কেন ঠিক জানি না, তবে শুনেছি বাবার বেতন ঠিক মতো আসত না। বিভিন্ন মুদির দোকান খালি ধার অনেক কিছু দিন দিত তার পর আর মাল দিত না। একটু বড়ো হয়ে বেতন অনিয়মিত কিন্তু কিছু দোকান দার ছিল অসাধু। তারা আগে জেনে নিত বেতন কত, তারা পনেরো কুড়ি দিন জিনিস পত্র দেওয়ার পর জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে বেতনের সব টাকা টা করে রাখত। এটা আমরা বুঝতে পারলাম যখন আমরা বড়ো হলাম, মুদি দোকান থেকে মাল গুলো আনতে লাগলাম। খাতা আমাদের কাছে থাকতো রোজ দাম লিখি আনতাম। হিসেবে রাখতে শুরু করলাম তখন থেকেই পরিবর্তন হল। তবে বেতন অনিয়মিত হলেই গণ্ডগোল হতো। এবার আমার জণ্ম ভিটের কথা বলি। জণ্ম ভিটে বলতে সিঙ্গুর থানার অন্তর্গত পল্তাগড় গ্রামের বড়ো রাস্তা থেকে ভিতরে দু দিক বাঁশ বন দিয়ে ঘেরা একটি জায়গা। এখাই আমাদের মাটির দেওয়াল, পেটো খোলার ছাউনি দেওয়া টিনের দরজা দেওয়া এক কামরার ঘর। বাড়িতে নানা ফল আর ফুলের গাছ। প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল না সব দিক ফাঁকা। একটু বৃষ্টি আর জোর হাওয়া দিলে বাঁশের ডগ লেগে পেটো সরে যেতো, তখন বৃষ্টির জল আর বাইরে পড়ত না। ইঁদুরের গর্তে ভর্তি দেওয়াল কোনো কোনো সময় ভেঙে পড়েছে। তবে মূল ঘরের নয় পাশের আরেক টি ছোট চালা মতো রান্না ঘর ছিল তার দেওয়াল বেশি ভাঙত। বড়ো ঘরের দেওয়াল একবার ভেঙে পড়ে ছিল। কেন জানি না আমাদের প্রতি মানুষের এত রাগ কেন ছিল! আমার বাবা দেশ স্বাধীন হবার দু তিন বছর আগে এপার বাংলায় এসেছিলেন। আর ভারত ভাগ হয়ে যখন দেশ স্বাধীন হলো তখন তো পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু দের কচু কাটা করছিল। বাবা ঠাকুমার মুখে শুনেছি সব থেকে বেশি দাঙ্গা পীড়িত ছিল নোয়াখালী যশোহর খুলনা বরিশাল বাবা 1948 এর এপ্রিল মাসে তত কালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ঠাকুমা কে নিয়ে আসেন। ঠাকুমার ভাষায় বাংলাদেশী টান ছিল। আমরা ছিলাম বাঙাল বাচ্চা, আরও কত কী। শিক্ষিত মাষ্টার মশায়রা পর্যন্ত বলতো। ঐ সব শুনতাম আর ভাবতাম তাহলে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দারা বাঙালি নয়! ভীষণ হীনমন্যতায় ভুগেছি। 

Tuesday, 21 November 2017

আমি ও ফেসবুক

আজ দু তিন দিন ধরে একটা ব্যাপার আমি লক্ষ করছি। আমার ফেসবুক একাউন্টে প্রায় তিনশ লোক বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠিয়েছেন। আমি জানি ও চিনিও তাঁরাও আমাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠিয়েছেন। এই দুই তিন দিন আগে আমার ফেসবুকে বন্ধু ছিল মাত্র সাত জন। এখন প্রায় তিনশোর কাছে। কার কোথায় বাড়ি, কার একাউন্ট ফেক কিছুই জানি না। হঠাৎ করে আমার জনপ্রিয়তা বেড়ে গিয়েছে। না কি অন্য কিছু। আমি জানি ফেসবুক লাইক, শেয়ার আর সামান্য কিছু লেখার জন্য। কারণ এমন কিছু আমি আমি ফেসবুক পোস্ট করতে পারি না। আমি কারও বন্ধুত্বের অনুরোধ ফেরাই বেছে বেছে বন্ধু করা হয় নি। অনেক তাই করেন, জানি না আমি ভুল করলাম না তো। আমি একটা কথা জানি যেটি বেদের কথা, "বাসুদেবায় কুটুম্ব বকম" পৃথিবীর সকল মানুষ আমার আত্মীয়। সনাতন হিন্দু ধর্ম কখনো কাউকে ছোট করে না।
ফেসবুকে অনেক রকম লেখা থাকে যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে। এই লেখা ছোট কবিতা, কত রকম স্টাইলে তোলা ছবি। আর বিজ্ঞাপন, কার কত উপকার হয় জানা নেই। যদি রাজনৈতিক দল হয়, তাহলে তো বর্তমান শাসক দল গত বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যেতো। কিন্তু ভয় দেখিয়ে হোক জোর করে হোক আর ভালোবাসায় হোক নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু যাদের ব্যবহার করে এরা ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে, সেই প্রান্তিক মানুষ গুলো পয়সা জন্য হোক, আর একটু কাজের জন্য হোক, আর একটু খাবার জন্য হোক এরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে যাবেই। যে ছেলেটি আজ ফেসবুকে সরকার বিরোধী কথা বলছে বা প্রচার সেই আবার আসছে নির্বাচনে ভয়ে হোক বা ভক্তি তে ভোট দিয়ে আসবে। তাই ওসব প্রচার করে লাভ কী?

শুভ বিকাল

প্রত্যেক বন্ধুকে আমার পক্ষ থেকে শুভ বিকালের শুভেচ্ছা। আমার ব্লগ দেখবেন কেমন।

Monday, 20 November 2017

শুভ সকাল।

দিন টি সকলের ভালো কাটুক ।সকল বন্ধুকে আমার পক্ষ থেকে সুপ্রভাত জানাই। সকলে ভালো থেকো।

প্রকৃত প্রতিবেশী কে?

ছবি দেখে ভাবলে হবে না। ঐ বাড়ি আমার বাড়ি। ওটি সমাজের সবচেয়ে ভালো মানুষের। যে অপর কে নিজের অধীনে দেখতে ভালো বাসে যে অপরের নিজের বলে সহজে গ্রহণ করতে পারে। নিজেকে খাঁটি প্রতিবেশী বলে দাবী করে। পাশের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ না পৌঁছয় তার ব্যবস্থা করে। পাড়ার কোনো ব্যক্তি কিছু উন্নতি, করলে
বাধা দেবার ব্যবস্থা করে।
এই ব্যক্তি নিজেকে সঠিক প্রতিবেশী বলে দাবী করে। এই ব্যক্তি তাপস মাজি, হেমন্ত দাস নামে এক ঘুস খোর কে দিয়ে জমি জরিপ করিয়ে অপরের জমি দখল করে ভোগ করে।
এই ব্যক্তিটি নাকি সঠিক প্রতিবেশী।. আমার পুরনো বাড়ি টি এর উল্টো দিকে টালির ছাউনি দেওয়া। "গুড  সামারিটন" জেশস ক্রাইস্টের জীবনের একটি কাহিনি পড়ে ছিলাম, যেখানে আহত ব্যক্তিকে কেউ সাাহায্য করে নি। সকলেে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিল। কিন্তু সুুদূরসমরবাসীয় তাাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করে ছিলেন।  ঐ সমর দেশ বাসি পরদেশীও হলেও সেই ছিল প্রকৃত প্রতিবেশী। তাহলে ঐ ব্যক্তি টি কি প্রকৃত প্রতিবেেশী? 

Saturday, 28 October 2017

আমার পঞ্চাশ বছর। ( ১ম অংশ)

আমার ছোট বেলার অনেক কথা মায়ের কাছে শোনা। মায়ের কাছে শুনেছি আমি সিঙ্গুর হাসপাতালে বাংলার ১৩৭০ বা ১৩৭১ সালের মাঘ মাসের শেষ বুধবার সকালে না রাতে বলে ছিল মনে নেই তবে আমি ১০ টা ৩০ মিনিটে জণ্ম গ্রহণ করে ছিলাম। আমাদের বাড়ি টা ছিল সিঙ্গুর থানার অন্তর্গত পল্তাগড় গ্রামে মাটির বাড়ি পেটোখোলার ছাউনি, টিনের দরজা। আমরা চার ভাই বোন আমার দিদি বড়ো তার পর আমি আমার পরে দু ভাই। আমার বাবা সুশীল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল সাব ডিভিশনের অর্ন্তগত গৌরনদী উপজিলার নলচিরার বাসিন্দা ছিলেন। তখন নলচিরা ছিল বাখরগঞ্জের গৌরনদী থানার অন্তর্গত ।এখন কী নাম হয়েছে জানা নেই। আমার পিতা ভারত স্বাধীন হবার আগেই এপার বাংলায় এসেছিলেন এবং সিঙ্গুর থানার অন্তর্গত পল্তাগড় গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ।তিনি বিরামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। আমার পিতামহের নাম ছিল উপেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। আমার পিতামহীর নাম ছিল ননীবালা দেবী। আমার বাবার কাছে যে দলিল পরচা ছিল সেগুলি তে আরও কতগুলি নাম আছে তারা কারা আমার জানা নেই। যেমন ১)ধীরেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় ২)নরেন্দ্র নাথ বন্দ্যোপাধ্যায়েরধ্যায় ৩)বামা সুন্দরী দেবী
৪)গোপাল চন্দ্র মুখোপাধ্যায় ৫)মুকুন্দ চক্রবর্তী
৬)দুর্গাপদ ভট্টাচার্য ৭)ক্ষীরোদসুন্দরী দেবী এদের কার সাথে কী সম্পর্ক আমার জানা নেই। তবে এদের কারো কারো নামের নীচে থানা - গৌরনদী নলচিরা সাং - কান্ড পাশা লেখা আছে। বাবার কাছে শুনেছি বাবার মামা ধীরেন্দ্র নাথ মুখোপাধ্যায় ফৌজদারি কোর্টের উকিল ছিলেন। এতো কথা লিখছি কেন? যদি কেউ আমার ব্লগের লেখা পড়েন আমার পিতার সম্পর্কের কেউ এদেশে বাংলাদেশ থাকেন তবে command box এ মন্তব্য লিখবেন। কেন আমি আগেও চেষ্টা করেছি পিতার সম্পর্কের কেউ আছে কিনা। আমি শুধু জানতে চাই বাবা কেন দেশ স্বাধীন হবার আগেই এপার বাংলায় এসেছিলেন, এবং প্রায় কপর্দক শুন্য অবস্হায়। এখানে বলি যে আমি সম্পত্তির অধিকার পাব বলে খোঁজ করছি, তা কিন্তু নয়। এটি নিছক কৌতুহল।
আমার কথা না বলে কেমন বাবার কথা বলে ফেললাম, তবে হ্যাঁ বাবা মা ছাড়া কেউ পৃথিবীতে আসতে পারে না। তাই বাবার কথা হল দরকার হলে আবার লিখব। এবার মায়ের কথা একটু লিখতে হবে, কারণ আমার মায়ের কথা না বললেই নয় কারণ আমার মা না হলে আমি আজ এই জায়গায় আসতে পারতাম না। আমার জন্য মা নিজের জীবন দিয়ে দিয়েছেন। আমার এক কূলাঙ্গার ভাই এর হাতে। মা আমাদের অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছেন, মাকে আমরা পেয়ে ছিলাম অন্য ভাবে। তিনি জীবনের প্রতিদিন যুদ্ধ করে গেছেন। সুখ ভোগ করতে হয় নি। মায়ের সেই কষ্টের দিন গুলো আমি ভুলতে পারি না। কী অমানুষিক দুঃখ দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হতো। বাবা নামেই চাকরি করতেন, আমরা অর্ধেক দিন খেতে পাইনি।কারণ তখন শিক্ষক দের বেতন কম ছিল আর অনিয়মিত ছিল, আর একটি কারণ আমার বাবার অপরিনাম দর্শিতা, আর একটি কারণ হল দোকান দারের চালাকি। কত বেতন জেনে নিয়ে ঠিক ঐ টাকা পর্যন্ত মাল দিত আবার বাড়তি দাম নেওয়া, ও জিনিস না এলেও ধারের খাতায় তা লিখে দেওয়া, এভাবে পনেরো দিনের মধ্যে বেতনের সবটাকা খরচ দেখিয়ে নিয়ে নেওয়া। আমরা বড়ো হয়ে বাবা কে দোকানে যেতে দিতাম না। আমরা যেতাম আর প্রতি দিন যা লাগতো নিয়ে আসতাম। সেই সময় ওই বেতনে সারা মাস খরচ করেও কিছু টাকা উদ্বৃত্ত হতে লাগলো।
আমাদের কষ্ট একটু লাঘব হল, তবুও মাকে কারখানায় কাজ করতে যেতে হতো। 1980 সালের পর থেকে অবস্থা উন্নতি হলেও। তার আগের অবস্থা অবর্ননীয়, পরের বাড়ি থেকে খাবার চেয়ে আনা ফ্যান চেয়ে খাওয়া। কোনো দূরবর্তী স্থানে কোনো সার্বজনীন অনুষ্ঠানে খাওয়ানো হলে, ঠাকুমার হাত ধরে খেতে যাওয়া, সে ট্রেন পথে হলেও চলে যেতাম। জামা কাপড় চেয়ে এনে দিতেন মা। মাঝে মাঝে কিনেও দিতেন, শীতের পোশাক কেনা ছিল অকল্পনীয়। পুরনো বিছানার ছেঁড়া চাদর সেলাই করে কেটে সমান করে গায়ে দিয়েছি। অর্ধেক দিন খাবার জুটত না, তার উপর লেখা পড়ার জন্যে অপরের বই চেয়ে আনা খাতা পেন পেনসিল চেয়ে আনা পেনসিল দিয়ে লিখে মুছে আবার লেখা।
তার উপর ছিল পাড়ার লোকের অত্যাচার তাদের কারো যদি সূঁচও যদি হারিয়ে যেতো সেটা চুরি করেছি আমরা আমাদের ভাঙা ঘরে চলত তল্লাশি আর ভাঙচুর তো ছিল। এসব নিয়ে আরও কিছু কথা লেখা আছে, এর আগে আমার কথা, ও অসত্বিতের সংকট এ দু টো লেখা তে। হয় তো কেউ পড়ে নি। জানি না ভবিষ্যতে কেউ পড়বেন কি না? তবু আমি লিখি আমি ছোট থেকে অনেক নাটক কবিতা লিখে ছিলাম যা এখন অতীত। কারণ সে সব লেখা খাতা এখন আর খুঁজে পাই না। আমার একটা প্রশ্ন মনে দীর্ঘদিন ধরে ঘোরে বাঙাল কী আলাদা কোনো জাত যেমন হিন্দু, মুসলিম, শিখ না হলে এপার বাংলায় শিক্ষিত মানুষ ও বাঙাল জাত বলে সম্বোধন করে কেন? আমি স্কুলে পড়ার সময় আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং অন্য অনেক শিক্ষক বলতেন বাঙাল জাত। আমি পলতাগড় রাধারানী প্রাথমিক এবং পলতাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। এখনও অনেক ভালো শিক্ষিত মানুষ কে বাঙাল জাত বলতে শুনেছি। সেই জন্যই আমার মনে প্রশ্ন জাগে ওপার বাংলার মানুষ তথা ওপার বাংলা থেকে বিতাড়িত ভিটে মাটি ছেড়ে আসা মানুষ এপার বাংলায় বাঙাল জাত।
আমার ছোট থেকেই থেকেই আরেক টি প্রশ্ন জাগে, আমার মনে হয় এই প্রশ্ন টি শুধু আমার নয় যেসব মানুষ ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় এসেছিলেন, আমার বাবার মতো নিস্ব রিক্ত হয়ে, নিজের প্রাণ টুকু হাতে করে, তাদেরও এই প্রশ্ন। এই তথাকথিত বাঙাল জাত তৈরী করল কারা? দেশ স্বাধীন হল, দেশ তিন টুকরো হলো, বাংলা ও পাঞ্জাব ভাগ হলো। হাজার হাজার মানুষের ঘর বাড়ি জ্বলল। কত মানুষের প্রাণ গেল, আমি মনে করি এর জন্যে দায়ী গান্ধী এবং নেহরু এবং জিন্নাহ। ক্ষমতার লোভে তারা দেশ ভাগ করেছেন। এরা সুভাষচন্দ্র বোস থেকে শুরু অন্য বাঙালি নেতা দের সহ্য করতে পারতেন না। আর এই তীব্র জাতি বিদ্বেষ থেকে বাংলা ভাগ এবং সুভাষচন্দ্র বোস কে দেশে ঢুকতে না দেওয়া। এতেই ক্ষান্ত হননি ওপার বাংলা থেকে আসা মানুষ গুলো কে আশ্রয় দিয়েছেন। আন্দামান এবং দন্ডকারণ্যে কিন্তু বেঁচে থাকার সুব্যবস্থা করেন নি। আমার ভীষণ ঘৃনা হয় তথা কথিত এই সব বড়ো বড়ো দেশপ্রেমিক নেতাদের যারা দেশে প্রেমের নামে ক্ষমতার লোভে একটা জাতির ঐক্য ভেঙে দিয়ে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে। এদের এই কুচক্রী সিদ্ধান্তের ফলে পরিবার গুলো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, সামাজিক সম্পর্ক গুলো কাকা দাদা পিসি মাসি হারিয়ে তারা দেশ ছেড়ে চলে এসেছে। আবার অনেকর প্রিয়জন দের মরতে দেখেছেন। আর তখন ঐ সব নামি স্বাধীনতা সংগ্রামী ইংরেজ দের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সাজানো জেলে গিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামী সেজে। দেশটাকে ভাগ করে নিয়ে ক্ষমতা ভোগ করতে আরম্ভ করে দিয়ে ছিলেন। তারাই আসলে এই নতুন জাতি অর্থাৎ "বাঙাল জাতি" তৈরী করে দিয়েছে। আর এদের জন্য এখন অনেক রকম অত্যাচার সহ্য করতে হয়। এমনকি তাদের এপার বাংলায় মেয়ে দের বিবাহ করার অধিকার টুকু নেই। যদিও হয়ে থাকে তবে সেটা অজান্তেই। জেনে সত্যিই বলে যদি বিবাহ হয়। তাহলে অনেক তথ্য গোপন রেখে না হলে কী করে ছেলেটি কে ঠকানো যায় তার ব্যবস্থা পাকা করে রাখে। কেন এতো কথা কারণ আমার বাবাকে বিয়ে করতে হয়েছিল। নদিয়া জেলার ক্ষীতীশ চক্রবর্তীর মেয়ে যোগমায়া কে, যারা বাংলাদেশের পাবনা জেলা থেকে এপার বাংলায় এসেছিল। এ তো গেল একটা দিক, আরেকটা দিকও আছে, যেমন ওপার বাংলার থেকে আসা মানুষ ব্রাহ্মণ হতে পারে না। আবার সে যদি আমার বাবার মতো সব হারিয়ে এপার বাংলায় আসে তবে, তিনি ব্রাহ্মণ হলেও ব্রাহ্মণ নন। শুনতে হয় ওপার থেকে এসে গলায় পৈতে ঝুলিয়ে ব্রাহ্মণ হয়েছে। আর মুখের ভাষা হলো শালা বাঙাল বামুন। আমি জানি না এসব কোনো কথা যারা শহরে বাস করেছেন। ওপার থেকে টাকা পয়সা সঙ্গে এনেছেন, তাদের শুনতে হয়েছে কিনা? আমার জানা নেই, কিন্তু  ছিন্নমূল, সর্বস্ব হারানো, আত্মীয় স্বজন হারানো, মানুষ গুলো কে প্রতি নিয়ত এপার বাংলার শিক্ষিত অশিক্ষিত মানুষের কাছে অপমানিত হতে হয়েছে। জীবন যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে থেকে এসেছে। শুধু ঐ তিন নেতার ক্ষমতা বা গোদির লোভে বা প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী হবার লোভে। লোভের স্বীকার হতে হয়েছে বাঙালি হিন্দু দের আর পাঞ্জাবের অধিবাসী শিখ দের। এখনো এরা অত্যাচারিত। আমাদের পলতাগড় গ্রামের ভিটেরে সামান্য জমি দখল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সেই বাবার আমল থেকে। যা আমি আগেই লিখেছি, বাবার আমলে আমি দেখেছি দড়ি দিয়ে জমি মেপে অশান্তি করতে। আমাদের বাড়িতে অনেক রকম ফলের গাছ ছিল। সেসব গাছে ফল হলে এসব হতো। ফল গুলো পেড়ে নিয়ে যেত নষ্ট করে দিত। আর মুখের ভাষা ছিল বাঙাল তাড়াতে হবে। আমিন এনে মাপা হতো তখন ঠিক হতো। একটা কথা বারবার বলতে শুনেছি ওজমি আমাদের নয় দান করা, বাবার কাছে শুনেছি দলিল করার খরচ কমানোর জন্য দানপত্র করা হয়েছিল। সকলেই হয়তো ভাবছেন তোমারা খুব ভালো কিছু বলতে না, শুধু শুধু পেছনে লাগতো। আমারা কি করতাম আগে বলে ছি। ওদেরি কারও কারও চাকর গিরি করতাম একমুঠো মুড়ি খাবার আশায়। যদি একটু ভুল হতো আর আমাদের বাড়িতে পোষা কোনো পশু জমিতে বা বাড়ির আশ পাশে যেতো তাহলে তো কথাই নেই শুরু হয়ে যেতো, ওদের বাঙাল তাড়ানো অভিযান।