Wednesday, 7 June 2017

ধর্ম ও সমাজ ব্যবস্থা।

আমি এখানে যে কথা গুলো লিখছি হয় তো অনেক আগেই জানেন। আর একটা কথা কোন ধর্মকে আঘাত করা বা ছোট করা আমার উদ্দেশ্য নয়। ধর্ম কী কেন সঠিক জানা নেই। কারণ সেই আদিম যুগের মানুষ যে সব নিয়ম পূজা অর্চনা করত। এখন ও তাই করে আসছে, ইতিহাসে পড়েছি, আদিম যুগে মানুষ যে সব ভয় পেত বা কেন হচ্ছে বুঝতে পারত না, সে সব ঘটনা কে দেবতা জ্ঞানে পূজা করত। যেমন বন্যা বা বান থেকে জলের দেবতা বরুণ। বৃষ্টি হলে বাজ পড়ত সেই জন্য ব্রজ ধারী ইন্দ্রের পূজা করত বা এখনো করে। সর্প বা সাপের দেবী মনসা, তা ছাড়া সূর্য, চন্দ্র, অনেক আছে। তাহলে বোঝা যাচ্ছে হিন্দু ধর্ম কত প্রাচীন। আমার তো গর্ব হয় এরকম একটা প্রাচীন ধর্মের ধারক আমি। কিন্তু আর্য রা এসে এই হিন্দু ধর্মকে আরো উন্নত ও কঠিন করে তুলে ছিল। পৌরোহিত্য প্রথা চালু করা, কাজের ভিত্তিতে সমাজকে ভাগ করা, যা ধীরে ধীরে কঠিন জাতি ভেদ প্রথায় পরিনত হয়েছে। এই জাতিভেদ যত কঠোর হয়েছে হিন্দু ধর্ম ভেঙে অন্য ধর্মের জন্ম হয়েছে। বৌদ্ধ ধর্ম, জৈন ধর্ম, আর কত ধর্মের আবির্ভাব ঘটেছে এই ভারতে। শেষে যখন তুর্কি আক্রমণ ঘটেছে তখন অনার্য, অন্য পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীকে কাছে টানতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু খুব একটা সুফল দেয়নি। আবার  বৈষ্ণব ধর্ম যখন প্রবল ভাবে প্রচার হচ্ছে। ইসলাম ও হিন্দু ধর্মের উপর আঘাত হানছে তখন সত্যপীর ঠাকুরের উদ্ভব ঘটেছে। এখনও হিন্দু ধর্মের তথা কথিত উচ্চবর্ণের হিন্দুরা পিছিয়ে পড়া দলিত শুদ্র বা হরিজন দের যে ভাবে অপমান করছে তারা ক্রমশ অন্য ধর্মের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। আমার গ্রামে গত বছর দুর্গা পুজো কমিটির সভাপতি করা হয়নি বর্গক্ষেত্রী বা বাগদি বলে। তারা নিজেদের মতো ঠাকুর এনে পূজো করছে। উচ্চবর্ণের হিন্দু দের মধ্যে অনেকে অশিক্ষিত আছে যারা বিবেকানন্দের সেই বাণী পড়েনি যে "হে বীর সর্দপে বল আমি ভারতবাসী। মুর্খ, অজ্ঞান, মুচি, মেথর, চণ্ডাল, ভারতবাসী আমার রক্ত আমার ভাই।"
কিম্বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "হে মোর দুর্ভাগা দেশ" কবিতাটা পড়ে নিলে ভালো হয়। তাহলে হিন্দু ধর্মের বর্তমান অবস্থা থেকে অনেকটা মুক্তি পাবে। দলিতদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে তাদের সকল সামাজিক অধিকার দিতে হবে। তবে সহস্র বছরের পুরানো হিন্দু ধর্ম রক্ষা পাবে। আজ দলিতরা অনেকেই ধর্ম পরিবর্তন করছে। উচ্চ বর্ণের অত্যাচার থেকে বাঁচতে অন্য ধর্ম গ্রহণ করছে। আর বেশ কিছু ধর্মনিরপেক্ষতার নাম করে বিশেষ এক ধর্ম গোষ্ঠীকে মাথায় তুলে নাচানাচি। তারাই এখন আমাদের নাচা ছে।

No comments:

Post a Comment