Monday, 5 November 2018

আমার গয়া ভ্রমণ, এক বিরল অভিজ্ঞতা।

আমি গত 1-11-2018 গয়া যাবার টিকিট বুক করে ছিলাম। হাওড়া মুম্বই ভায়া গয়া মেলে, আর ফেরার টিকিট বুক ছিল শিপ্রা এক্সপ্রেসে। ফেরার টিকিট. কনফার্ম ছিল না। অবশ্যই অনলাইনে টিকিট বুক করে ছিলাম। 1-11-2018 রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে হাওড়া থেকে মুম্বই মেল ছাড়বে, আমরা সন্ধ্যা ৭ টা ২০মিনিটে হরিপাল স্টেশন থেকে ট্রেন করে হাওড়া গিয়ে মেল ধরব।  দুপুরে ম্যাসেজ এল ট্রেন ৭ ঘন্টা ২০ মিনিট লেট। মেল ট্রেন টি ছাড়বে 2 - 11-2018 ভোর ৫ টা ১৫ মিনিটে । আমাদের যাওয়ার খুব দরকার ছিল, তাই টিকিট বাতিল না করে হরিপাল থেকে তারকেশ্বর হাওড়া শেষ ট্রেন ধরে হাওড়া গেলাম। সারা রাত প্রায় জেগে, ট্রেনে A-1 কামার রিজার্ভ করা সিটে উঠলাম। মুম্বই মেল ৫ টা ১৫ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়লো। খানা জংশন পর্যন্ত ট্রেনের গতি ঠিক ছিল, তারপর যে কী হলো বলতে পারছি না । যে স্টেশনে থামার কথা নয় সেখানেও ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ছিল। জানি না চেন টেনে ট্রেন থামানো হচ্ছিল কী না! গাড়ির গতি সে কথা না লেখা ভালো কখনো ৪৫ কিমি সর্বোচ্চ ১১০ কিমি ঘন্টায় মেল যাচ্ছিল। আমাদের পৌঁছে যাবার কথা ছিল বেলা ১১টা ৩৬ মিনিটে পৌঁছলাম দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে।
কাজ মিটিয়ে ফেরার সময়ে ঘটল আরেক বিপত্তি। আগেই বলেছি ফেরার টিকিট কনফার্ম ছিল না। টিকিট ছিল শিপ্রা এক্সপ্রেসে ১ ও ২ নং ওয়েটিং লিস্টটে। মাঝখানে উঠার স্টেশনে একই ভাবে শিপ্রা এক্সপ্রেসের A-1 কমপারমেন্টে, এবং বিকল্প আরও সাত টি ট্রেনের নাম দেওয়া ছিল। যখন আসতে দু ঘন্টা বাকি তখনও অনলাইন দেখাচ্ছে কনফার্ম হওয়ার সুযোগ ৮৭ % কিন্তু যে চার্ট ডিসপ্লে হচ্ছিল সেখানে শিপ্রা এক্সপ্রেসের ডিসপ্লে হচ্ছিল না। ছেলে এদিকে ওদিকে দেখতে লাগলো নেট সার্চ করতে যাচ্ছি নেটওয়ার্ক নেই। মুখ্য টিকিট পরীক্ষক কে জিজ্ঞেস করল তিনি বলেন ট্রেন লেট আছে, আপনাদের ও টিকিট বাতিল হয়ে গেছে। আপনারা জেনারেল টিকিট কেটে চলে যান। অনেক কষ্টে যখন নেটওয়ার্ক এলো আমরা চেষ্টা করছি পরের দিনের ভোরের কোনো টিকিট অনলাইন বুক করতে। কারণ ঐ রাতে স্টেশনের কাউন্টারে   রিজার্ভেশন টিকিট কাটা যাবে না। অনলাইনে দেখলাম একটা  (নামটি এখন ঠিক মনে করতে পারছি না) মেলে কলকাতা অর্থাৎ চিৎপুর স্টেশনে আসবে সেই মেলে 
AC 3 টায়ার সব টিকিট আছে কিন্তু আমরা টিকিট বুক করতে পারছি না। যতটা সম্ভব এই ট্রেন টি গয়া আসার কথা ২-১১-২০১৮ ভোর ৩ টে ১০ মিনিটে। দুজনে মিলে অনেক চেষ্টা করেও টিকিট বুক করতে পারছিলাম না। এই হতাশার মধ্যে দুজনে মিলে গিয়ে জেনারেল কামরার টিকিট কেটে আনলাম। তারপর ও অনেক চেষ্টা করলাম কিছুতেই 2-11-2018 ভোরের বা 3-11-2018 সকালের AC ওয়ান, টু এবং থ্রি যাই বলুক কোনো টিকিট বুক করতে না পেরে হতাশ হয়ে, রাত ১১টা ১০ মিনিটের ডাউন ট্রেন ধরতে বলে দু নম্বর স্টেশনে এলাম। একটা চিন্তা হচ্ছিল আমার বড়ো ছেলে সাথে ছিল ও একটু গরম সহ্য করতে পারে না। এখানে বলি রাত ১১টা ১০ মিনিটের ট্রেন গয়া এলো ১২টা ৪৫ মিনিটে।  ঘেমে চান করে যায় এবং খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভয়ে ভয়ে ওকে নিয়ে জেনারেল কমপারমেন্টে উঠলাম। যথারীতি বসার জায়গা নেই, দাঁড়াবার জায়গা ও ঠিক মত নেই। দুজনে উঠে প্রসাবের গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে আসছি, আর ছেলে কে বাপি একটু কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাক ধানবাদ এলে ঠিক বসার জায়গা পাব। যে সময়ে ধানবাদ আসার কথা এলো তার দু ঘন্টা পর। কারণ মাঝে মাঝে চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে মানুষ নেমে যাচ্ছিল। সত্যিই ধানবাদে বসার জায়গা পেলাম। টিকিট কেটে ছিলাম বর্ধমান পর্যন্ত, কারণ কষ্ট টা কম করার জন্য, বর্ধমানে নেমে দৌড়ে গিয়ে বড় পুত্র টিকিট কেটে নিয়ে এলো কর্ড বর্ধমান ট্রেনে কামার কুণ্ডু আসার। কারণ যোধপুর এক্সপ্রেস বর্ধমান ঢুকে ছিল লেটে তখন বর্ধমান কর্ড ফার্স্ট ট্রেন ছাড়ার ঘোষণা হচ্ছিল। যাহোক ধন্যবাদ ভারতীয় রেল, তোমার এতো সুন্দর ব্যবস্থাপনা খুব ভালো লাগলো। 

No comments:

Post a Comment