Tuesday, 6 November 2018

আমরা বাঙালি আর ওরা বাঙাল।

আমার লেখা টা  সম্পূর্ণ টা পড়বেন কেমন। গত ৪-১১-২০১৮ বাজারে গিয়ে ছিলাম। বাজার করতে অনেকেই মাছ কিনেছ, সেখানে লটে মাছ বিক্রি হচ্ছিল। আমি ও ছিলাম সেখানে কথাটা মাছ বিক্রেতা বলল, এই মাছ বাঙালরা ভালো রান্না করে, কিন্তু বাঙালিরা পারে না। আমি বুঝলাম বাঙাল না হয় ওপার বাংলার মানুষ কিন্তু বাঙালি তাহলে এপার বাংলার মানুষ! সকলে বলবেন বাঙাল বললে আপনি রেগে যান। না আমি বাঙাল বললে রেগে যাই না। আমি রেগে যাই যারা সঠিক ইতিহাস না জেনে কথা বলে বোলে। আবার অনেকে বলেন জ্যোতি বসু বাঙাল দের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে ছিলেন। আমি বলি না সকল বাঙাল বা বাঙালি সমর্থন করে নি। অনেকে কংগ্রেস কে সমর্থন করে। আমি এই কংগ্রেস সমর্থক দের বলছি, যারা এখনো পারলে গান্ধী পরিবারের পা ধোয়া জল খেতে পারে। সেই সব কংগ্রেস কর্মী দের আপনারা তাহলে, দেশ ভাগের সমর্থক, আপনারা দেশ ভাগ করে বাঙাল তৈরি করলেন। আর এখন তাদের দেশে ঠাঁই দিতে নারাজ বিভিন্ন ভাবে অপমান করে যাচ্ছেন, দোষ টা আপনাদের অনেকের নয়, কারণ ইতিহাস যদি সঠিক লেখা না হয়, সঠিক ইতিহাস জানতে পারলে বা জানার ইচ্ছা থাকলে কংগ্রেস কে সমর্থন করতেন না। বিশেষ করে দেশ ভাগের নায়ক কে জাতির জনক বানিয়ে দিতেন না। যে ভারত বর্ষের গরীব মানুষের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা করেছে তাকে পূজা করতেন না। বললাম সঠিক ইতিহাস সঠিক তথ্য জানতে চেষ্টা করুন। আজ কাল নেটের যুগ বহু তথ্য নেটে পাবেন, কেবল নেটে অসভ্য ছবি দেখে দেখে কাটিয়ে দিলে হবে, আর যারা দেশ টা কে ভাগ করে কয়েক হাজার মানুষের জীবন অকল্পনীয় অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে ছিল।সেই কংগ্রেস কে সমর্থন করলে হবে।  আমি জানি আপনি এপার বাংলার সেই সুখী মানুষ স্বাধীনতার সময় যাদের পূর্ব পুরুষ কে ভিটে মাটি ছেড়ে চলে আসতে হয় নি। স্বজন হারানোর বেদনা বুকে চেপে চোখের সামনে সন্তান কে হত্যা করেছে কিছু করতে পারে নি। অনেকে শত অত্যাচার সহ্য করেও এখনো রয়ে গেছে, প্রতি নিয়ত তারা অত্যাচারিত, আপনি যদি সত্যি কারের মানুষ হন, আপনার যদি বিবেক মনুষ্যত্ব বলে কিছু থাকে এবং শুধু ভোটের ও নিজের আখের গোছাবার রাজনীতি না করেন তাহলে এখুনি কংগ্রেস শব্দ লাগানো দল গুলো কে ভুলে। মানুষের সমর্থনে এগিয়ে আসুন।
  আমি মাইনোরিটি এলাকায় আদম সুমারি করেছি। সেখানে উপস্থিত হলে বলত একজন বাঙালি এসেছে, কী সব লিখবে বলছে। কথা গুলো বলছেন বাংলা ভাষায়, আমি না হয় জানতাম তাদের মাতৃভাষা আরবি, কিন্তু এ দিন যে বলছেন তিনি এপার বাংলার একজন মাছ বিক্রেতা। আমি আগেই লিখেছি, সঠিক শিক্ষার অভাব আছে বিশেষ করে ইতিহাস শিক্ষার, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সঠিক ইতিহাস শিক্ষা না হলে, পরিনতি এটাই হবে। আগের কোনো লেখায় লিখেছি, যে প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে অনন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর আলাদা ইতিহাস বই দেওয়া এবং সেখানে বাংলার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে, না হলে এসব চিরকাল থাকবে। আমি ধরে নিলাম উনি মাছ বিক্রি করেন অশিক্ষিত কিন্তু আমি আগেই লিখেছি, আবার ও লিখছি। আমার ছোট বেলার বা বিদ্যালয়ে পড়ার সময় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে অনেকে বলতেন বাঙাল বাচ্ছা। তারা তো উচ্চ শিক্ষিত, আর এই সব উচ্চ শিক্ষিত মানুষ যদি বলেন তাহলে সাধারণ মানুষ তো বলবেই। বলবেন তুমি গায়ে মাখছ কেন বলছে বলুক কানে শুনতে হয় শুনে নাও উত্তর না দিলেই হবে। আমি এই কথাটা ছোট থেকে শুনেছি, যে বাচ্চা দের বলছে তারা হীনমন্যতায় ভোগে, সমাজে মিশতে পারে না। আমি ভুগেছি, সঠিক ইতিহাস পড়ানো হোক, যেখানে কেবল একটি বা দুটি লাইন নয়, যে দেশ স্বাধীন হলো বাংলা ভাগ হোলো আর ওপার বাংলা থেকে হাজার হাজার মানুষ এপারে চলে এলো, শুধু এইটুকু আমরা পড়েছি, না এটা সঠিক ইতিহাস নয়। এপার বাংলা তথা ভারতের তা বড়ো সব শিক্ষিত নেতা মন্ত্রী দের কাছে আমার প্রশ্ন একবার আয়নায় পিছনের ইতিহাসের দিকে ফিরে দেখুন, তখন কার দিল্লির বড়ো বড়ো কংগ্রেস নেতারা দেশ স্বাধীন করার নামে কী করে ছিলেন? অন্য কোন প্রদেশ কে ভাগ না করে কেবল বাংলা আর পাঞ্জাব কে রক্তাক্ত করা হয়েছিল কেন? কারা বাঙাল জাত তৈরি করল? ক্ষমতা লোভী নেতা যারা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লোভে আর একজন নিজের পদবী টা যাতে ইতিহাসে থাকে সেই একজন অ-হিন্দু কে দত্তক নিয়ে নিল। এরা তৈরি করে ছিল বাঙাল জাত, এদের হটকারি সিদ্ধান্তের জন্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিটে মাটি ছেড়ে কেবল প্রাণ টুকু হাতে নিয়ে এপার বাংলায় এসেছিলেন, তারাই আজ বাঙাল, তারা এপারে এসেও অত্যাচারিত, আজ আসাম বাঙালি দের মেরে তাড়াচ্ছে, কাল মহারাষ্ট্রে বাঙালি তাড়ানো হবে। বাঙালি জাতি আর কত সহ্য করবে, স্বাধীনতার সময় শ্যমাপ্রসাদ মুখার্জী ছিলেন, তিনি একাই এসবের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, বাঙালি কে কালাপানি পার করে দেওয়া আটকে ছিলেন। আজ তিনি নেই, তাকে একটা বিশেষ দল সরিয়ে দিয়ে ছিল। আর নয় এবার বাঙালি ওঠো জাগো নিজেদের জানান দাও, আমরা সেই মাস্টার দা সূর্য সেন, বীর নেতাজী, ক্ষুদিরাম, রাস বিহারী বসু, কানাইলাল দত্ত, যতীন মুখার্জি ( বাঘা যতীন) এদের বংশধর। আমাদের রক্তে বইছে সেই মহান মায়ের রক্ত যারা পরাধীন ভারতে অস্ত্র শস্ত্রে বলীয়ান ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত নাড়িয়ে দিয়ে ছিল। যাদের ভয়ে প্রবল পরাক্রমশালী ইংরেজ রা রাজধানী রাতারাতি কলকাতা থেকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে ছিল। সেখানে ও বাঙালি তাদের শান্তিতে রাজত্ব করতে দেয়নি। রাস বিহারী বসু ও বসন্ত কুমার বিশ্বাস লর্ড হান্ডিঞ্জ কে হত্যা করার চেষ্টা করেন, বসন্ত কুমার কে ফাঁসি দেওয়া হয়। রাস বিহারী বসু পালিয়ে যেতে সমর্থ হন। তিনি জাপানে পালিয়ে গিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনী গঠন করেন। আর ভগত সিং রাজ গুরু সুখদেও আর বটুকেশ্বর দত্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট বোমা বিস্ফোরণে অংশ নেন। ভগত সিং দের ফাঁসির সময় গান্ধী বলেছিলেন, এসব লোক দের ফাঁসি দেওয়ার অধিকার ইংরেজ দের আছে। আরো অনেকে অনেক আছে এখানে লিখে শেষ করা যাবে না। সেই সব বাংলা মায়ের দামাল ছেলে দের রক্ত কোথায় গেল? নাকি এক টুকরো রুটি ছুঁড়ে দিয়ে, আপনা কে বলে ভোট দিয়ে দেবেন, আপনি ও সেই রুটি খেয়ে গুটি গুটি পায়ে ভোট দিয়ে আসেন , সেই মহান বাঙালি বীর সন্তানরা এটা চেয়েছিলেন। তারা চিরকাল পরে পরে মার খাও আর এক টুকরো রুটি আর আর এক মুঠো ভাত ফেলে দেবে আর আমরা সে গুলো চেটে পুটে খেয়ে কাছা দুলিয়ে ভোট দিয়ে এসে বাড়িতে ঘুমাব। ভোট দিয়ে এসে নিশ্চিন্তে ঘুম দিতে পারছেন। যতই ভোট দেন আর যাই করুন যতই মন যুগিয়ে চলুন শান্তি তে বাস করতে দেবে না। তার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে, ওপার থেকে প্রাণের ভয়ে এপারে এসেছেন আট চল্লিশ সাল থেকে যে নির্মম হত্যা দেখেছেন। চোখের সামনে নিজের নিকট আত্মীয় কে খুন হতে দেখেছেন। সেই ভয়াবহ দিনে এপার বাংলায় এসেছেন কে কোথায় ছিটকে পড়েছে খোঁজ নিয়েও খুঁজে পাননি। কত মা তার সন্তান হারিয়েছে, কত শিশু অনাথ হয়েছে। কত মেয়ে ধর্ষিতা হয়েছে, তার ঠিক নেই। সেই সময় এক মহাপুরুষ নোয়াখালী গিয়ে ছিলেন মায়া কান্না কাঁদতে। বাঙালি জাগো এপার বাংলার কথায় বাঙাল জাগো, শিব যেমন মহা ধ্যান ভেঙে তাণ্ডব নৃত্য করে ছিলেন, তার শূল নিয়ে, কারণ কী ছিল তার প্রিয় মানুষের মৃত্যু। বুঝিয়ে দিতে হবে আমরা দোয়াঁচলা নয়। কথা টা আমার বিদ্যালয়ের এক দিদি মনির, তাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম কথাটার মানে কী তখন তিনি পরিষ্কার উত্তর দিলেন। কথাটার অর্থ জণ্মের ঠিক নেই যাদের তাদের বলা হয়, ওরা নাকি ওপার বাংলার মানুষ কে দোয়াঁচলা বলে থাকে। ভাবুন নিজেদের ডি এন এ স্টেট করলে কি হবে তার ঠিক নেই। আমি তো দেখি এপার বাংলার একশো টা মেয়েই চরিত্র হীন। বিয়ের আগেই শুয়ে পড়ে, কিছু দিনের মধ্যেই এ্যবারশন করে অন্য আরেক টা ছেলের গলায় ঝুলে পরে। অনেকে আবার প্রথম প্রেমিক কে সঙ্গে আনে সন্তান জন্ম দেবার জন্য, প্রথম স্বাদ কিছুতেই ভোলা যায়। এই যাদের চরিত্র তারা আবার অপরকে দোয়াঁচলা বলে গালাগাল দেয়। যা হোক আর নয়, এবার পরিশেষে নজরুল ইসলামের আমার কৈফিয়ত কবিতার কয়েকটি লাইন লিখব, একটু পাল্টে নিয়ে নজরুল ভক্তরা মাপ করে দেবেন কেমন। " রক্ত ঝড়াতে পারি না তো একা, তাই লিখে যাই রক্ত লেখা। যারা দেশ ভাগ করে হাজার হাজার বাঙালির নিল প্রাণ, যারা দু পায়ে মরাল হাজার হাজার বাঙালির লাশ। আমার এই রক্ত লেখায়, লেখা হোক তাদের সর্বনাশ।"

No comments:

Post a Comment