Thursday, 15 November 2018

যম পুরীতে অধিবেশন ।

যমরাজ বলেন, ভানু বাবু আপনি কেন যেতে চাইছেন না  " মহারাজ আমি এর আগে দুবার ঘুরে এসেছি। একবারে ম্লেচ্ছ ব্যপার, কে যে কার বৌ আর কে যে কার মা, কে কার স্বামী বোঝা যাচ্ছে না। যে যাকে খুশি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, রাস্তা ঘাটে যা খুশি তাই করছে। হোটেলে নাইট ক্লাবে পার্টির নাম করে, সব খোলা খুলি আরম্ভ করে দিয়েছে। বিয়ের আগেই সব করে বসে আছে, কত নতুন নতুন রোগ হচ্ছে। ঐসব কাণ্ড দেখে আমি শেষ বারের বার আর বিয়ে করিনি। বাঘা বলে, মহারাজ আপনি তো সব জানেন আমাদের জিজ্ঞেস করছেন। মর্ত্যের অবস্থা ভালো নয়, জানেন আমি ভুত হয়ে অনেক অনেক বার আপনার কাজে মর্ত্যে গিয়েছি। দেখেছি সেখানে যেন তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ চলছে। ভোট এলে তো কথাই নেই, আপনি জানেন কম আত্মা আমরা নিয়ে এসেছি। কত কচি কচি আত্মা দেখলে মায়া লাগে। যম রাজ, "তুমি কী করবে? ওর মৃত্যু ওভাবে লিখেছেন বিধাতা। গুপি বলল," আমি এই বিধাতার সাথে একবার দেখা করতে চাই।"    " সে তুমি করতে পার, কারণ তোমরা আমার বিশেষ দূত, তুমি কথা বললে যে পরিবর্তন হবে, এর কোনো মানে নেই। তবে ভানু বাবু যে টা বলল ওর জন্য দায়ী এই মেছুনি, ভুতের রাজ্যের বা নরকের দায়িত্ব পেয়ে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মর্ত্যে মানুষ করে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ষাঁড় আর পাঁঠা গুলো কে বেশি পাঠিয়েছে। তারা আজ যত গণ্ডগোল পাকাচ্ছে। ওদের সঙ্গে গাভী আর ছাগী গুলো কে পাঠাতো তাহলে এই গণ্ডগোল হতো না। মেছুনি এতখন চুপ করে ছিল এবার বলল, " মহারাজ যত দোষ আমাকে চাপিয়ে দিচ্ছেন, গো ভুতরা অনেক দোষ করে গেছেন। আর গাভী আর ছাগী মানুষ হতে চায় না। ওরা বলে মানুষ হলে ভীষণ জ্বালা খাবার যোগার করা খুবই কঠিন। চড়ে যা খুশি খাওয়া যাবে, আর মানুষ হলে নানা ফিরিস্তি টাকা চাই ভালো রোজগার না করতে পারলে খেতে পাবে না। আবার মেয়ে মানুষ ওরে বাবা সে পুরুষদের কাছে ভোগের বস্তু। বাড়িতে বিয়ে করে নিয়ে যাবে, আর একটু ত্রুটি হলে, রেহাই নেই যা খুশি তাই সাজা খেতে না দেওয়া মার ওতো লেগেই আছে। ওর থেকে গাভী ছাগী হওয়া খুব ভালো, মানুষ হলে আপনি নরকে পাঠিয়ে নরক যন্ত্রণা দেবেন। হয় তেলে ভাজা করে দেবেন। করাত দিয়ে কাটবেন। মুগুর দিয়ে পেটাই করবেন। মানুষ গুলো বেশি নরক যন্ত্রণা ভোগ করে। আপনি এসব বন্ধ করুন, তাহলে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে না।যমরাজ, " কী আর করা যাবে ওরা যে পাপ করে আসে তাতে স্বর্গে পাঠানো যায় না। ওদের নরক যন্ত্রণা পেতে হবেই। আমি বন্ধ করতে পারব না। মানুষেরা মর্ত্যে গিয়ে জণ্ম নিয়ে ভাবে কেউ কেটা হয়ে গেছি। যা খুশি তাই করতে পারি, পাপ পুণ্য জ্ঞান থাকে না। কেউ কেউ তো আমাদের মানে না, লোক ঠকানো জীব হত্যা মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া। খুন চুরি ডাকাতি মানুষ হত্যা, আর ঐ যে বললে মেয়ে মানুষ মানে ভোগের বস্তু। পুরুষ প্রকৃতি বিধাতার তৈরি তাদের মিলন হবে। নতুন জীবন সৃষ্টি হবে, সে মিলন হবে সুখের সুন্দর ভাবে, তা না করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোর করে অসুস্থ ভাবে সব সৃষ্টি হচ্ছে।সত্যিই তোমার কোনো দোষ নেই, তবে তুমি ঐ যে আজব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছ। নরকের যে খানে যা খুশি যা খুশি করে দিচ্ছ। পাপের সাজা কমিয়ে দিয়েছ, আবার আমি এখান থেকে যা সাজা বলে পাঠাচ্ছি। তুমি সে গুলো সহজ সরল করে দিচ্ছ। মেছুনি  " মহারাজ না হলে কেউ মর্ত্যে মানুষ হতে চাইছে না। আমি বলেছি মর্ত্য থেকে নরক পর্যন্ত রেল লাইন বসাব। আপনি যদি অনুমতি দেন খুব ভালো না হলে চুপি চুপি পুষ্প রথ পাঠিয়ে ওদের নিয়ে আসব কষ্ট দেব না। আচ্ছা মহারাজ রাবন স্বর্গের সিঁড়ি তৈরী করতে শুরু করে ছিল কেবল রাম বাধা হয়ে দাঁড়াল তাই। আমি রেল বসাব বলেছি বলে এতো কথা। বলুন না আমি ভুতের রেল কেমন হবে ভুতের রেল কেউ দেখতে পাবে না। নিয়ে আসবে আপনার দূতেরা তাদের রথ দিন তাহলে এই সমস্যা থাকবে না। " .   "ঠিক আছে আমি চেষ্টা করছি ভুতেরা যাতে নরকে কষ্ট কম পায় তার ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখব। চিত্র গুপ্ত তুমি না ঢুলে কোথায় কী পরিবর্তন হচ্ছে লক্ষ্য রাখবে।".  " যে আজ্ঞা মহারাজ। "
( চলবে) 

No comments:

Post a Comment