Monday, 10 September 2018

আজব দেশ বা মজার দেশ ।

 
এর আগেও এই শিরোনামে একটি লেখা লিখে ছি জানি না কজন পরেছেন। আমার লেখা পড়ে কম লোকই। আর মন্তব্য তো নেই তাই বুঝতে পারি না। আমার লেখা সত্যিই কেউ পড়ছে কিনা। কারোর কোনো  মন্তব্য নেই। লেখাটি লিখছি কেউ পড়বে বলে মনে হচ্ছে না। যদি পড়েন তবে মন্তব্য করবেন।
আজ কাল যা হচ্ছে তা লেখা উচিত কিনা। আমদের ভারতবর্ষ সত্যিই একটা আজব দেশ, কত মজার মজার আইন মজার ঘটনা। একবার ভাবুন যারা দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে লড়াই করে ছিল। তাদের কথা কে শোনে, যারা ইংরেজী শিক্ষিত হয়ে তাদের গোলামী করবে বলে সে দেশে লর্ড মাউন্ট ব্যটৈনের সঙ্গে খাতির জমিয়ে সেখানে বসে রইল। সে সব মানুষের দল ক্ষমতায় বসে গেল। যারা ইংরেজ দের গোলামী করত বা পা চাটত তারা। আইন গুলো হলও সেরকম, আপনি চাষ করবেন বা অন্য প্রয়োজনে লোন নেবেন হয়তো পঞ্চাশ হাজার বা এক লক্ষ টাকা আপনার চোদ্দ গুষ্টির পরিচয় পত্র চাই। এর আগেও হয়তো লোন নিয়েছেন ঐ ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করে দিয়েছেন। তাও আপনার চোদ্দ গুষ্টির কাগজ চাই না হলে হবে না। আর বড়ো শিল্পপতি লোন নেবেন কোনো নেতা মন্ত্রী লিখে দিলেই মিলবে লোন। সে লোন কয়েক কোটি টাকা, আবার শোধ না করলেও হবে। শিল্প ঢকে তুলে লোন শোধ না করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও কেউ বলার নেই। আর আমি আপনি ঐ পঞ্চাশ হাজার টাকার একটা কিস্তি যদি মিস হয়েছে, বাড়িতে পেয়াদা চলে আসবে, একটা খিস্তি মিস যাবে না। শিল্পপতি দের লোন মুকুব হয়ে যাবে। কী আজব দেশ। আবার দেখুন ক্লাব গুলো কে টাকা দেওয়া হচ্ছে, খেলার উন্নতি জন্য আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছোট্ট ছেলে মেয়ে রা খেলবে তখন টাকা নেই। নামাজ পড়াবেন টাকা পাবেন। হজে যাবেন টাকা পাবেন, দুর্গা পুজো করবেন টাকা পাবেন। প্রাথমিকের শিক্ষকরা পড়াবেন টাকা নেই। তাদের বেতন কম দিতে হবে, আবার একেবারে কচি পাঁচ বছরের বাচ্চাদের যারা প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি তে পড়ে তাদের পোশাকের টাকা নেই। সিভিক পুলিশ শিক্ষা বন্ধু সর্ব শিক্ষার কর্মী এদের জীবন ধারণের মত বেতন দিতে হবে টাকা নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্ছা রা খাবে বরাদ্দ ৪ টাকা। ঐ দিয়ে জ্বালানি তেল নুন ঝাল মশলা সব জিনিস কিনতে হবে। আবার ৮৫%বাচ্ছার টাকা মিলবে। তিন মাস খাওয়ানোর পর মিলবে। তিন মাস শিক্ষকরা ধার করে বা নিজের টাকায় খাওয়াবে প্রয়োজন মনে হলো টাকা দেবেন না হলে নয়। কারণ 2011 সালে এ ঘটনা ঘটেছে সিঙ্গুর ব্লকে। বাম সরকার দেনা করে গেছে, শিল্প নেই কাজ নেই তাতে কি? ধনী দের দু টাকা কিলো চালের ব্যবস্থা আছে। যার বাবা কোটি পতি বা লাখ পতি সেও কন্যাশ্রী পাবে নবম শ্রেণিতে পড়লে সাইকেল পাবে। আবার তার সঙ্গে আছে রূপশ্রী আরও অনেক শ্রী। কোনো বাড়ির যত জন নবম শ্রেণীতে পড়বে সকলে সাইকেল পাবে। এম পি, এম এলে দের বেতন বাড়বে তারা আড়াই বছর ঐ পদ ধরে রাখতে পারলে পেনশন পাবে। আর সরকারি কর্মচারী ত্রিশ বছর চাকরি করবে তার জিপিফ কাটবে। প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় বর্ষের টাকা কতটা বাড়তে পারত তা তারা পাবেন না। সাধারণ সুদ পাবেন, তবুও তার পেনশন নেই, কী অদ্ভুত দেশের আইন কী মজার দেশ। আবার দেখুন বর্তমানে একটি বাঙালি ব্যাঙ্ক হয়েছে। এটা আগেই ছিল গ্রামের মেয়েদের লোন দিত, শুনতে কত ভালো না। গ্রামের মেয়েরা লোন পাচ্ছে তাদের উন্নতি হচ্ছে। রহস্য অন্য জায়গায় বলবেন তুই ব্যাটা ভালো নয়, খালি খুঁত খুঁজিস। ধরুন গ্রামের একটি মেয়ে পাঁচ হাজার টাকা লোন করল, তাকে দেওয়া হলো তিন হাজার টাকা বলা হলো তুমি প্রতি সপ্তাহে পাঁচ শ টাকা করে এগারো সপ্তাহ দেবে। এগারো সপ্তাহ দেওয়ার পর ঐ দুই হাজার টাকা ফেরত পাবে। ভালো কথা এগারো সপ্তাহ কেটে গেল মেয়ে টি খেয়ে না খেয়ে টাকা শোধ করল। কিন্তু ঐ দু হাজার টাকা তাকে আর দেওয়া হল না। বলা হলো ওটা লোন বই খোলার টাকা। এবার ভাবুন আড়াই মাসে তিন হাজার টাকার সুদ আড়াই হাজার টাকা। এখনও একই ব্যবস্থা আছে। যার মাথা থেকে এটি এসেছে লোকটির পদবী দেখে মনে হচ্ছে সদগোপ বা কায়স্থ। যদি কায়স্থ হন তবে বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "কায়েত মরে জলে কাক বলে না জানি কোন ছলে আছে।" এই টি নাকি এখন ব্যাঙ্কের অনুমতি পেয়েছে আরও ভালো করে গলা কেটে লোন দেবে বাড়ির মেয়েদের আর তারা স্বামী যদি পাঁচ কিলো চাল কিনতে দেন, তিন কিলো আনে নিজে একবেলা না খেয়ে থাকে পাঁচ কিলো আলুর জায়গায় আড়াই কিলো কেনে। অর্থাৎ সংসার কোন রকম চালিয়ে নিজে না খেয়ে থেকে সপ্তাহে লোনের কিস্তি শোধ করে। কী আজব দেশ স্বাধীন হবার সত্তর বছর পরেও মানুষ মানুষকে শোষণ করে। আরেক টি বড়ো চিটিংবাজ সংস্থা আছে সে আবার খূব নাম করা তার অনেক দালাল আছে। তারা কমিশন পায় এরা অনেক অনেক ভালো ভালো কথা বলে পকেট কাটে। তিন বছর ধরে কিস্তি না দিলে টাকা ফেরত পাওয়া যায় না। অনেকেই তিন বছর ধরে কিস্তি দিতে পারে না। সে সব টাকার হিসাব নেই, যদি কোন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হল, তার পরিবারের টাকা ফেরত পেতে যার পাওয়ার সেও মৃত্যুর দোরগোরায় পৌঁছে যাবে। তখন বন্ডের নানান শর্ত দেখা যাবে। যে ইংরেজি পড়তে পারে তাকে মাইকোস্ক্রপের নীচে রেখে লেখা পড়ে নিতে হবে। আর যে পড়তে পারেন না। বা পড়েও বাংলা করতে জানে না সে গেল। আর যদি নাম করা ব্যক্তি হন কোনো প্রভাবশালী হন তবে ক্লেম পেতে বেশি সময় লাগবে না। কী আজব দেশ, জনগণ দ্বারা পরিচালিত জনগণের সরকার। কিন্তু জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। জনগণ টিভি চ্যানেলে দেখচ্ছ টাকার লেনদেন হচ্ছে। কলেজ ভর্তি হতে গেলে ঘুষ লাগছে। চিটিংফাণ্ডে টাকা রেখে সর্ব শান্ত হচ্ছে। কে চুরি করেছে বোঝা যাচ্ছে। তবু তার শাস্তি নেই, ওসব প্রভাবশালী ব্যক্তি নেতা মন্ত্রী ওদের কে ধরবে। জনগণের অধিকার নেই ওদের পাল্টে দেবার। আবার দেখুন কোনো সাধারণ মানুষ যদি মুরগি চুরি করেছে তবে তার জেল হবেই হবে। কী আজব দেশ? আজ এই পর্যন্ত পরে আবার মনে হলে নতুন করে লিখব।

No comments:

Post a Comment