Thursday, 27 September 2018

সোনার গদা ( শেষ অংশ)

দুপুরে খাওয়ার পর সকলে আবার মিলিত হলো একটা লম্বা ঘরে। তখন মনোতোষ বাবু এসে ছিলেন কিন্তু তিনি তখন কিছু বলেন নি। দুপুরের খাবার খেতে গৃহ কত্রী সকল কে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছিলেন। আজ এ বাড়িতে সকলে মিলে দুপুরে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিলো। কারণ ভবতোষ বাবু সব ব্যবস্থা করে ছিলেন। কেবল গৃহ কর্তার বাল্য বন্ধু কেশব বাবু ছিলেন না। তিনি সেই হরিপদ মিস্ত্রি কে গেছেন। এখনও কোন খবর নিয়ে আসতে পারেন নি। যাহোক সকলে চুপচাপ সত্যেন বলল "  মনোতোষ বাবু এবার আপনি বলুন কী হয়েছিল সে দিন।"  " বাবা মশাই সেদিন আপনি জেলে ডেকে নিয়ে জাল ফেল ছিলাম অনেক গুলো বড়ো মাছ জালে উঠে ছিল। আমি চলে আসব এমন সময় কেশব কাকু সেখানে এলো। বলল তুমি মাছ ধরাছ আমি তো তোমাদের বাড়ি যাচ্ছি। জেলে কে বলল তুমি ঐ জায়গাটা একবার জাল ফেলে দেখ আরও বড়ো মাছ আছে। পুকুরের উত্তর পশ্চিম কোনে একটা জায়গায় ঢিল ছুঁড়ে দেখিয়ে দিলেন। আবার যে দিন বাবা মশায় একা গেলেন, সে দিন ভোরে এসে জিজ্ঞেস করে গেলেন বাবা হাঁটতে গেছেন কিনা। আমি বললাম আপনি বলেছিলেন আপনি যাবেন না, তাই বাবা মশায় একটু আগে বেড়িয়ে গেছেন। শুনে আমতা আমতা করে বলল আমি যাব না। আমি এখন একটু স্টেশনের দিকে যাব। ট্রেন ধরতে হবে কলকাতা যাব। " মনোতোষ বাবু কথা শেষ হয় নি। কেশব বাবু এসে ঢুকল হল ঘরে তিনি এবাড়ির সব চেনেন। তিনি বললেন " আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছে, দেখুন আমি, - - - " শুধু এটুকু মাত্র বলেছেন তখন সত্যেন বলল,"  কেশব বাবু আপনি হরিপদ মিস্ত্রি কে খুঁজে পাননি। ওকে আর খুঁজতে হবে না। আপনি জিনিস টা এখনো নষ্ট করেন নি। আপনি ফেরত দিয়ে দিন কেউ কিছু বলবে না।" বড়ো ছেলে বলল, "  কাকা বাবু আপনি আমাকে বলতে পারতেন, আমি আপনাকে সাহায্য করতাম।" কেশব " তোমরা আমাকে চোর বানিয়ে ছাড়লে। বিশ্বাস করো আমি, " কথা শেষ করতে না দিয়ে রজত বলল," আর কোনো কথা নয় জিনিস টা কোথায় আছে বলুন? আপনার বাল্য বন্ধু কে কেন কষ্ট দিচ্ছেন? " ভবতোষ - " দেখ কেশব যদি তোর কাছে থাকে শুধু ঐ গনেশ ঠাকুরের গদা টা ফেরত দে। আর কিছু তোকে দিতে হবে না। আমি কেশ তুলে নিচ্ছি সুরেশ বাবু তোকে কিছু বলবেন না।" সত্যেন " আপনি যদি না নিয়ে থাকেন তাহলে জেলে কে ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় জাল ফেলতে বললেন। বলে ভবতোষ বাবুর কাছে চলে এলেন। আবার দেখুন আপনি যে কদিন ভবতোষ বাবুর সঙ্গে হাঁটতে যাচ্ছিলেন ঐ কথা বা ওরকম কোনো কথা ভবতোষ বাবুকে কেউ বলে নি। কিন্তু আপনি যেদিন সঙ্গে গেলেন না। সেদিন ভবতোষ বাবু কে আবার কথা টা শুনতে হল। শুধু আপনি ভাবেননি ঐ দিন সুরেশ বাবু কে নজর রাখতে বলা হয়েছিল। মনোতোষ বাবু আপনি বাকী টা বলে ফেলুন। মনোতোষ, " কেশব কাকা চলে যাবার পর আমি ভজু কে নিয়ে মাঠে গিয়ে ছিলাম। বেগুন একজন পাইকের ভোর ভোর বেগুন নিতে এসে ছিল। তখন দেখি আমরা দেখি কেশব কাকা জমির পাশ দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন। আমি চিনতে পেরেছি কারণ কিছুখন আগে ঐ পোশাক পরে আমার কাছে এসে ছিলেন বাবা মশায় হাঁটতে গেছেন কিনা জানতে। "    সত্যেন " কী কেশব বাবু এর পরও বলবেন জিনিস টা আপনার কা নেই। কারণ আপনি সেদিন সুরেশ বাবুর তাড়া খেয়ে মাঠ দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। যে হেতু মাঠের দিকে কুয়াশা বেশি তাই আপনি মাঠের দিকে গিয়ে ছিলেন। " সুরেশ  " কেশব বাবু কেন অস্বীকার করেছেন আপনি ধরা পরে গেছেন। " 
কেশব আর কিছু বলতে পারলেন না। তখন সকলে মিলে বলল।ঠিক আছে আপনি ভবতোষ বাবু কে বলুন কী হয়েছিল? আমরা সকলেই বাইরে অপেক্ষা করছি। কেশব" না যা বলার আমি সবার সামনে বলব, তখন ঠাকুর ঘর সারানো হচ্ছিল। এক দিন ভবতোষ ঠাকুর ঘরের ছবির গোছা ফেলে এল। আমি ওখানে গিয়েছিলাম কেমন হচ্ছে দেখতে। একজন মিস্ত্রি চাবি টা আমায় দিল বলল বাবু চাবি ফেলে গেছেন। আমি চাবি টা নিয়ে এসে ভবতোষ কে দিলাম। তখন সূর্য ডুবে যাবে সন্ধ্যা প্রায় হয়ে এসেছে। আমার কেমন সন্দেহ হলো। আমি ঠাকুর দালানের দিকে গেলাম। একটু কাছে যেতে দেওয়াল ভাঙার আওয়াজ পেলাম। ঠাকুর দালানে ওরকম একটা চোরা কুটুরি আমি জানতাম না। আমি আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলাম। আড়ালে লুকিয়ে থেকে দেখি মিস্ত্রি রা একটা সিন্দুক নিয়ে বেড়িয়ে পড়ছে, এবং তার চাবি দিয়ে চাবি খুলছে। তখন বুঝলাম ভবতোষ সব চাবি ভুল বশত রেখে গিয়ে ছিল। ওরা চোরা কুটুরি খুলে রেখে ও সিন্দুকের চাবি রেখে আমাকে দিয়েছে। আর ঐ দিন ছিল কাজের শেষ দিন। সুযোগে ওরা কাজে লাগিয়েছে। যখন সিন্দুক খুলে সব বাড় করা হয়ে গেছে। তখন আমি চুপি কাছে গেলাম। ওরা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিল। বলল তোকে এই জিনিস টা দিলাম, বলে সোনার গদা টা আমার হাতে দিয়ে বলল। তুই ও আজ থেকে আমাদের সাথে চোর হলি। কাউকে যদি বলেছিস। তাহলে তোকে কী করব ভেবে পাবি না। আমি সেই থেকে অনেক ভাবে ভবতোষ কে মনে করাব বলে এই সব করতে, বাধ্য হয়েছি। " এর জন্যে আমি
আমাকে এবং আমার ছেলে কে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে।"  ভবতোষের মেজ ছেলে বলল, কাকা আপনি যেটা বললেন সেটা সত্যি ধরে নিলাম, তাহলে আপনি লুকিয়ে যখন দেখে ছিলেন, বললেন। তখন খবর দিলেন না কেন? " সত্যেন" আমরা সকলেই, সব ঘটনা টা শুনলাম। আমাদের প্রথম কাজ হবে ঐ মিস্ত্রি দের খুঁজে বের করা। কেশব বাবু আপনাকে আমাদের সঙ্গে আর যেতে হবে না। কেন আমি চাই না আপনি হুমকির মুখে পড়ুন। রজত ওদের ঠিকানা খুঁজে বাড় করে ফেলেছে। সুরেশ বাবু আপনার ফোর্স নিয়ে রজতের সঙ্গে যান। আশা করি সব গুলো ধরা পড়ে যাবে।

(আমার ছোট গোয়েন্দা গল্প শেষ হলো। কেউ যদি পড়েন তাহলে কমেন্ট করতে অনুরোধ করছি। ভালো লাগলেও লিখবেন খারাপ লাগলেও লিখবেন কেমন। এপর আমার ছোট গোয়েন্দা গল্প থাকবে সত্যেন এর পাশাপাশি গোয়েন্দা হবেন আপনি ও।)

No comments:

Post a Comment