Saturday, 15 September 2018

সোনার গদা ( তৃতীয় ভাগ)

অনেক দিন পার হয়ে গেছে, প্রায় আট মাস কোনো কিনারা হয়নি। ভবতোষ বাবু বাইরে গেলে, আর সে রকম কিছু কথা বলতে শোনা যায় না। ভবতোষ দু একটা কথা শুনতে হয়েছে, তবে সে রকম ভাবে কিছু হয় নি। পূজো এমনি তে যৌলস হীন এ বছর যেন আরও কমে গেছে। সবার মন খারাপ, কত মানুষ ঘটনা বলা বলি করেছে তার হিসেব নেই। আজ সকালে ভবতোষ বাবু সকালে হাঁটতে যান নি। সবকিছু যেন ঠিক ঠাক নেই। এমন সময় কেশব বাবু এলেন রোজ কার মতো। আজ হন্তদন্ত এসে ভবতোষ বাবু কে বলল - " চল আজ এক জায়গায় যাব দেখি কিছু হয় কিনা।" "কোথায় বল?" কেশব - " আগে থানায়প্র যাব, তার পর দুজনে মিলে যাব।" ভবতোষ বাবুর ছোট বৌ মা চা জল খাবার দিয়ে গেল। দুজনে মিলে খেয়ে, আর কোনো প্রশ্ন না করে ভবতোষ কেশবের সঙ্গে বেড়িয়ে পড়ল। দুজনে মিলে হাজির হলো থানায়। সুরেশ বাবু কে সব কথা জানিয়ে, আবার দুজনে বেড়িয়ে পড়ল।
পলাশ পুরের দিকে, কেন এই পলাশ পুর যাবেন দুজনে বলছি। কেশব বাবু শুনে এসেছেন। পলাশ পুরে সত্যেন বোস নামে একজন সখের গোয়েন্দা বা প্রাইভেট গোয়েন্দা থাকেন। তার কাছে যাবেন দুজনে,  কুসুম ডিহি থেকে পলাশ পুর বেশি দূরে নয়। বাসে উঠে দুটো স্টপেজ পরে নামতে হবে। যা হোক দুজনে পলাশ পুর পৌঁছে খোঁজ নিয়ে সত্যেন বোসের বাড়ি পৌঁছে গেলেন। বাড়ির কলিং বেল টিপতে একজন এসে দরজা দিলেন।দরজার সামনে দুজন প্রৌঢ় কে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন কোথায় আসা হচ্ছে। কী দরকার? ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর ভেতরে নিয়ে গিয়ে বসতে বললেন। যেখান বসতে দিলেন সেটা একটা অফিসের মতো সাজানো ঘর। অল্প কিছু ক্ষণ পরেই সত্যেন বাবু ও তার বন্ধু রজত বাবু ঘরে এসে বসলেন। নমস্কার প্রতি নমস্কার জানান হলো। দুজনের বয়স ত্রিশের মধ্যে, সব বিষয়টা মনযোগ দিয়ে শুনলেন। তারপর সত্যেন বাবু বললেন " দেখুন আগে পুলিশের কাছে যেতে হবে তারা কত দূর তদন্ত এগিয়েছেন জানতে হবে। আর পুলিশ কে সঙ্গে নিয়েই এই তদন্ত করতে হবে। কারণ প্রথম থেকে পুলিশ বিষয় টির মধ্যে ছিল।" কেশব -- " সে তো করতেই হবে, না হলে তিনি মন ক্ষুন্ন হবেন।" রজত --- " জানেন তো কেউ আমাদের সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা প্রয়োজনে সকল কে জিজ্ঞাসা বাদ করতে পারি। তখন আপনি কিন্তু বাধা দেবেন না। " ভবতোষ --" না না ওসব আমি কিছু মনে করব না, আপনারা যখন যাকে খুশি জিজ্ঞাসা করুন। আমার দিক থেকে কোনো বাধা আসবে না। " সত্যেন --" ঠিক বলেছেন, প্রয়োজনে আমরা আপনার বাড়ি তে থাকতে হতে পারে। " ভবতোষ --" অবশ্যই তদন্তের স্বার্থে যেটা দরকার তাই করতে পারেন।" রজত --" ঠিক আছে, আপনি আমাদের একটা কাগজে লিখে দেবেন, চলুন আমরা আপনাদের থানায় যাই। " কেশব --" তাহলে আপনারা আজ থেকেই কাজ শুরু করে দিন। " সত্যেন --" সেই জন্যই থানায় যেতে হবে। চলুন যাওয়া যাক।" চার জনে দুটি মোটর বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরলেন।
                             থানা
কুসুম ডিহি এসে থানার মধ্যে ঢুকলেন। সুরেশ বাবু অন্য একটি কেসের তদন্ত করতে গিয়ে ছিলেন। তিনি ও থানায় ঢুকলেন, সত্যেন বোস থানায় ঢুকেছেন,  সত্যেন কে সুরেশ বাবু আগে থেকেই চিনতেন, কারণ আগে সুরেশ বাবু যে থানায় ছিলেন। সেখানে একটি কেসের তদন্ত করে ছিলেন দুজনেই, এবং সফল হয়েছিলেন আসামি ধরা পড়ে ছিল। সত্যেন কে দেখে তিনি খুশি হলেন, বললেন " ভালো আছেন সত্যেন বাবু" সত্যেন প্রতি উত্তর দিলেন " ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?" উত্তর এলো " ভালো" সৌজন্য বিনিময়ের পর সুরেশ বাবু বললেন "ভবতোষ বাবুর কেশ শুনেছেন" " হ্যাঁ সব শুনেছি। আপনি কত দূর এগিয়েছেন।" " আমি কয়েক জন দাগী কে ডেকে এনে জিজ্ঞাসা বাদ করেছি, আমার মনে হয়েছে ও কাজ ওদের নয়। কাজ টা বেশ কয়েক জন মিলে করেছে। একাজে বেশ পাকা না হলে ঐ সিন্দুক নিয়ে জলে ডোবানো একজনের কাজ নয়। সঙ্গে রাজমিস্ত্রি ছিল। " সত্যেন -- কী করে বুঝলেন" সুরেশ -- "কারণ যেভাবে দেওয়াল ভেঙে সিন্দুক বাড় করে এনেছে দেওয়ালের সেই টুকু কাটা হয়েছে।তা কোনো পেশাদার রাজমিস্ত্রি ছাড়া পারবে না।" সত্যেন -- " ভবতোষ বাবু ভেবে দেখুন কোনো সময়ে আপনি রাজ মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করিয়ে ছিলেন?"
"হ্যাঁ এই ঘটনার কয়েক মাস আগে, ঠাকুর ঘর মেরামত করতে মিস্ত্রি লাগিয়ে ছিলাম, সে তো ঐ ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আর মিস্ত্রি ছিল বাইরের কারণ হিন্দু মিস্ত্রি লাগিয়ে ছিলাম। আমার  ঠিক মনে নেই তবে আমার মেজ ছেলে বলতে পারবে।

No comments:

Post a Comment