Friday, 21 September 2018

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকের সম্মান !

গত ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস গেছে, অনেক শিক্ষক বিভিন্ন নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। দেশের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার। বর্তমান রাজ্য সরকারের দেওয়া শিক্ষা রত্ন।
( ছবি তে শিক্ষক মহাশয় আয়রন এবং ফলিক বাড়ি খাওয়াচ্ছেন)
শুনতে খুব ভালো লাগছে, শিক্ষকরা সম্মান পাচ্ছেন। 
কিন্তু কোন শিক্ষকরা পাচ্ছেন, যারা যখন যে শাসন ক্ষমতায় থাকেন তাদের অনুগতরা। আমি জানি আপনারা বলবেন অন্য কথা। আপনি পাননি তাই এসব লিখছেন। আমি শিক্ষকরা কেবলমাত্র শিক্ষক দিবসে নয়, সারা বছর সর্বত্র এরকম সম্মান পান। তারা যেন কখনো কারো দ্বারা অসণ্মানিত না। যেমন কোচবিহার না মালদহের ভোটার তালিকা তৈরির কাজ দেওয়া নিয়ে হলো। এবার বলি শিক্ষক দের অসম্মান করার প্রথম ফাঁদ মি-ডে-মিল। কীভাবে সেটা একটু খুলে বলি, আগেই বলি এসব দশ বারো বছর আগে ছিলো না। কারণ যে পদ তৈরি হয়েছিল শিক্ষক দের সহায়তা করতে। সেই পদে এমন কত গুলো মানুষ কে নিয়োগ করা হয়েছে যারা শিক্ষক বিদ্বেষী বটেই এবং শিক্ষা বিরোধী। মনে হয় এরা জণ্ম নিয়ে ছিলন বিএ এমে পাশ করে। তারপর চাকরি পেয়েছেন, আসলে ওই পদে আগে অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হতো। এখন বেছে বেছে যারা শিক্ষক সমাজ কে অসম্মান করতে পারেন, তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কলের জল খারাপ রান্না করতে হবে, কল ভেঙে পড়েছে রান্না করতে হবে। কোথায় থেকে জল আসবে প্রধান শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানবেন। এতো গেলো একটা দিক আরেকটা দিক ভারি মজার। ২০১১ সালের একটা ঘটনা বলি এই সময় চাল ( ঘটনা লিখছি সিঙ্গুর ব্লকের) চাল এবং টাকা আসত তিন মাস পর। অর্থাৎ তিন মাস ধারে খাওয়ানোর পর। তারপর টাকা আসত কিন্তু এগারো সালে এপ্রিল মে জুন মাস খাওয়ানোর পর জুলাই মাসে চাল আসে না, টাকাও আসে না। যখন খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারা গেল যে চাল দেওয়া হয়নি, টাকাও দেওয়া হবে না। কারণ চাল দেওয়া হয়নি খাওয়ালেন কীকরে??সেই টাকা আর কোনো দিন দেওয়া হয়নি। এই দেনা শিক্ষক রা মিটিয়ে ছেন নিজেদের বেতন থেকে, যেমন আগে পঞ্চাশ টাকা মাসে খুচরা খরচের টাকা আসতো  প্রধান শিক্ষক চক ডাষ্টার সাদা কাগজ ইত্যাদি কিনতেন, এখন প্রধান শিক্ষক তার পকেট থেকে কেনেন এখন তো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ আছে মাঝে মাঝে এই বিল ও প্রধান শিক্ষক নিজের বেতন থেকে দেন যাহোক এসব পরে আবার লিখব , এবার আসি মি-ডে- মিল এর কথায়। এখনও চাল আসে তিন মাস পর। টাকা আসে এক দেড় মাস ধার করে খাওয়ানোর পর। এবার একটা হিসেবে করি কী করে চাল থেকে যায় টাকা থাকে না। এ হিসেবে ঐ যাদের বসানো হয়েছে তারাও জানে, ওদের কে ( শিক্ষক) রাখা হয়েছে কীভাবে জব্দ করা যায়। অপমান করা যায় কীভাবে অপদস্থ করা যায় সেই জন্য। এবার চালের হিসেবে করি যেমন ধরুন জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসের ৬৭ দিনের চাল এল ১০০ জন ছাত্রছাত্রী হলে, চাল হবে = ১০০গ্রাম * ৮৫ * ৬৭= ৫৭০ কেজি বা 
১১ বস্তা ও ২০ কেজি। কারণ ৮৫% এর টাকা আর চাল দেওয়া হয়। এই চা। ( জানুয়ারি +ফেব্রুয়ারি +মার্চের) চাল এল এপ্রিল মাসের পনেরো তারিখে। ( তারিখটি সঠিক নাও হতে পারে।) খাওয়ানো হবে এপ্রিলের পনেরো দিনের মধ্যে ছুটি ছাটা বাদ দিয়ে বারো দিন। আর 'মে' মাসে গরমের ছুটি পরে ধরে নিলাম সরকার কোন বাড়তি ছুটি ঘোষণা করে নি, তেইশ বা চব্বিশ তারিখ হয়ে ছুটি পরবে। রবিবার ও ছুটি বাদ দিয়ে খাওয়ানো হলো আঠারো দিন। আর জুন মাসে স্কুল খোলার পর ছুটি বাদ দিয়ে এগারো দিন। মোট কত দিন? ঐ চালে খাওয়ানো হলো এপ্রিলে ১২ দিন + মে মাসের ১৮ দিন + জুন মাসের ১১ দিন = ৪১ দিন ধরে নেওয়া গেল ৮৫ জনের প্রতি দিন রান্না করতে হয়েছে, এবং ১০০ গ্রাম করে চাল ব্যবহার হয়েছে। তাহলে চাল লাগে প্রতিদিন ৮ কেজি ৫০০ গ্রাম (যা সাধারণত হয় না।) তাহলে চাল লাগল। ৮.৫ কেজি * ৪১ দিন = ৩৪৮. ৫কেজি। চাল পেলাম কত ৫৭০ কেজি আর খরচ হলো ৩৪৮ কেজি রইল কত? ৫৭০-- ৩৪৮ = ২২২ কেজি এবার যদি আগের মজুত থাকে তাহলে মজুত চাল বেড়ে যাবে। এ হিসেব ঐ তথাকথিত চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত মনসবদারাও জানে, কিন্তু আগেই বলেছি শিক্ষক দের হেনস্থা করার জন্য ওরা নিয়োগ করা হয়েছে। এখন আবার নিয়ম করা হয়েছে ঐ বাড়তি চাল ছাত্র দের দেওয়া যাবে না। কালো উকুনের মতো পোকায় চালের ঘর ভর্তি হয়ে যাচ্ছে তবুও দেওয়া যাবে না। অনেক কষ্টে ঐ পোকা বেছে রান্না করা হচ্ছে, কখনো থেকে যাচ্ছে, ভাতের কোনো স্বাদ নেই, কোনো সময় ভাতে গন্ধ হচ্ছে। তাও খাওয়াতে হবে, বাচ্চা ছাত্র ছাত্রীরা খেতে চাইছে না। বর্ষায় আবার সাদা সাদা জড়ানো পোকা সেও বেছে খাওয়া তে হচ্ছে। শিক্ষকরা নিরুপায় হয়ে খাওয়াছেন। এবার আসি টাকার হিসেবে। আগেই বলেছি এখন চাল জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মার্চের হলে। টাকা আসে এপ্রিল মে জুন মাসের আর এই টাকা আসে মে মাসে প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে। কত দিনের কত টাকা সব লিখছি। টাকা পাওয়া যাবে এপ্রিল মে জুন মাসের জন্য ৪৫ দিনের। অর্থাৎ সেই হিসাবে টাকা পাওয়া যাবে ৪.১৩ টাকা *৮৫ জন * ৪৫ দিন = ১৫৭৯৭
টাকা। কারণ একশো জনে ৮৫ জনের টাকা দেয়। এবার এই টাকা খরচ করা হবে ৪১ দিনে। ধরে নেওয়া গেল প্রতি দিন ৮৫ জন খাচ্ছে। যা হয় না কম বেশি হয়।
ধরা যাক একদিন ৭০ জন খেল সেই দিনের কত টাকা পাওয়ার কথা ৪.১৩ * ৭০ = ২৮৯ টাকা। খরচ হলো জ্বালানি ৮৫ টাকা কারণ এখন ৮৫২ টাকা গ্যাস ওর সাথে বহন খরচ আরও ২০ টাকা। যদি গড়ে ৮৫জনের রান্না করা হয় তবে একটা ১৪ কেজি গ্যাস সিলিন্ডার ১০ থেকে ১২ দিন চলবে। তাহলে আনুমানিক গ্যাস খরচ ৮৫ টাকা + ডাল পাঁচশ ৪০ টাকা ( মুসুর) + সঃ তেল ১/২ লিটার (. ৫লিটার) ৫৫ টাকা+ মশলা ( হলুদ জিরে অন্য ৬০টাকা + আলু ৮ কেজি, পিঁয়াজ ১ কেজি, লঙ্কা আদা রসুন কাঁচা আনাজ পাঁচ কেজি মোট ৩৫০ টাকা। ( আলু ১৮ টাকা কেজি পিঁয়াজ ২০ টাকা কেজি লঙ্কা আদা রুসুন ৪০টাকা আর আনাজ ৩০ টাকা হিসেবে) মোট হলো ৮৫+৪০ +৫৫+৬০+ ১৪৪+৬০+২০+১৫০ =৫৯০ টাকা। তাহলে প্রশ্ন কুলোয় কীভাবে? ঐ আগে ৪১ দিন বলেছি ওটি ছুটি বাদে হয় 
৩০ দিনের মত। আর গ্যাস আলু সবজির তেলর দাম ওঠা নামা করে। গড়ে খরচ হবে ৫০০ টাকা। কারণ ডিমের দিন খরচ বাড়ে, ডিমের দিন যদি ৬০ জন ছাত্রছাত্রী খায়। তবে ডিম লাগে ৬০ * ৫ = ৩০০ টাকা। এবার কাঁচা সবজি বাদে বাকি টা যোগ করে নিন। এবার বলি ঐ দেখাশোনার লোক বলছেন আপনার খরচ করার কথা ২৮৯ টাকা খরচ করে আপনি কেন ৫০০ টাকা খরচ দেখাবেন। আবার যোগ হয়েছে ২০১৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত কর্মী শিক্ষক এরা যে কী জিনিস তা ইউ টিউবে একটি গান সার্চ করে শুনে নিতে পারেন। গান টি ও ডাক্তার এর নকল " ও মাষ্টার"। এদের নিয়ে পরে আমিও লিখব আমার অভিজ্ঞতা। এবার তাহলে ডিমের দিন কারণ একটা বাচ্চা ছেলেও জানে বর্তমানে একটি ডিমের দাম ৫ টাকা কখনও কখনও ৬ থেকে ৬.৫ টাকা। টাকা তো ৪.১৩ টাকা ওতেই জ্বালানি ঝালমশলা আলু আনুসাঙ্গিক সব। তার সঙ্গে আছে হুমকি দেওয়া। এবার শুনছি চাল নিয়ে বলছেন কেন বেশি হবে।উপরের ছবি টি তে যে কাজ ঐ রকম অনেক কাজ এবং কাগজ বা ফর্ম পূরণ করতে হয়। যাহোক আপনারা বিচার করবেন।  বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকদের সম্মান আছে কি? 
       






No comments:

Post a Comment