Tuesday, 25 September 2018

আমার ও আমাদের রাজ্য।

আমার মনে আমারই মতো পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি সুস্থ মানুষ। যারা সত্যিকারের এই রাজ্য তথা সাধারণ মানুষের পশ্চিমবঙ্গে সুস্থ ভাবে বসবাস করতে চান। সেই মহান মানুষের কাছে আমার জিজ্ঞাসা। আপনারা বুকে হাত দিয়ে বলুন এতো রক্তপাত দেখ আপনি চুপ থাকবেন। প্রতিবাদ করবেন না, আমি জানি অনেকর মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে। প্রতিবাদ করলে আপনি মাওবাদীদ তকমা পাবেন। এখন আবার নতুন ভাবে মাওবাদী তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শহরের ভদ্র মাওবাদী, যারা লিখে প্রতিবাদ করে তথা প্রথিতযশা লেখক তাদেরকে হেনস্থা করে জেলে ভরে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। এঘটনা যদিও মুম্বইয়ে কবি ভারভারা সঙ্গে যা হল। আর আমাদের রাজ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে দু দুটো তাজা ছাত্র প্রাণ অকালে ঝরে গেল। মা বুক চাপরাছেন আর কেঁদে চলছেন, শাসক দলের বোর্ড গঠন হবে গোষ্ঠী সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে, সেখানে একজন পুলিশ অফিসারের গায়ে বোমা পড়ল। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবং পরে আমরা দেখছি, অনবরত রক্ত পাত। একই দলের লোকজন মারপিট করে মরছে। পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় কারণ, প্রকাশ্যেই নেতা বলছেন পুলিশ কে বোম মার তারপর তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। টেলিভিশনে দেখানো হচ্ছে তার পরও তিনি নির্দোষ কারণ তিনি নেতা খবরের কাগজে পড়ছি। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে আসলে কী ঘটে ছিল মানুষ জানাতেই পারল না। কারণ কথিত আছে মরা হাতি লাখ টাকা, তেমনি মরা মেয়ে কোটি টাকা হয়ে গেছে যে। বামফ্রন্টের শেষের দিকে এসে যা ঘটে ছিল। এখন যেন সেই শেষ থেকে শুরু হয়েছে। কোন প্রতিবাদ আন্দোলন করা যাবে না। ধর্মঘট হরতাল বনধ বাম জমানায় ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। কারণ তখন সব বিরোধী দল প্রতি কথায় বনধ ডাকত। আমার মনে আছে সিঙ্গুর নিয়ে কেবল সিঙ্গুর বনধ হয়ে ছিল ৩৯ বার। অথচ এই সিঙ্গুরে বাম জমানা থেকে শাসক দল জিতে আসছে, গত পঞ্চায়েত ভোটেও জিতেছেন। কীভাবে সেটা পরের কথা, এখানেও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব প্রকট পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পঞ্চায়েত সব হয়েছে, পুলিশ পাহারায়। যে পুলিশ প্রশাসন শাসক দল কে সাহায্য করছে তাদের কথায় বিরোধী দের মিথ্যে কেসে জেল বন্দি করছে। যা বাম জমানায় হতো, এই জন্য মানুষ পরিবর্তন করে ছিল যে সরকার পরিবর্তন হলে এগুলো আর হবে না। কিন্তু না পরিবর্তন কোথায়, ভালোর বদলে যেন আরও খারাপ হয়ে গেল। যে পুলিশ সাহায্য করছে সর্বত্র ভাবে, সেই পুলিশ আবার নিজের প্রাণ বাঁচাতে ফাইল মাথায় টেবিলের তলায় লুকিয়ে পড়ছে। আবার কোথাও আন্দোলনের নামে থানা আক্রান্ত হচ্ছে। পুলিশ কর্মীরা মার খাচ্ছেন। কান্নাকাটি করছেন থানা রক্ষা করতে পারেনি বলে। এসব আমরা টিভি চ্যানেলে প্রচারিত খবরে দেখছি।আপনারা যারা কথায় মোমবাতি নিয়ে মিছিল করতেন। তারা সত্যিই মানুষের মৃত্যুর জন্যে প্রতিবাদ করতে মিছিল করতেন না নিজের সার্থ রক্ষা করতে আন্দোলন করতেন। যে কোন অকাল মৃত্যু আমায় ব্যথিত করে, আমি স্থির থাকতে পারি না। মায়ের বুক ফাটা হাহাকার, সে জানে তার সন্তান আর ফিরে আসবে না। কেউ ফিরিয়ে আনতে পারবে না। আমি যখন টিভিতে দেখি তখন আমার বুক ফেটে কান্না আসে। মনে হয় যেন ছুটে সেখানে চলে যাই সন্তান হারানোর যন্ত্রণা আমি  লাঘব করতে পারব না। মা গো এ রাজ্যে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার কারোর নেই। কারণ প্রতিবাদ আন্দোলন করলেই মরতে হবে। এটাই এই পোড়া রাজ্য তথা দেশে সাধারণ মানুষের ভবিতব্য। কারণ সাধারণ মানুষের দুঃখের কথা কেউ শুনবেন না। যারা নিজেদের সুনাগরিক বলে মনে করেন।তারা আজ বধির যেসব মা তাদের সন্তানদের অকালে চলে দেখেছেন, যে সব স্ত্রী তাদের স্বামীর অকাল মৃত্যু দেখেছেন। আর যে সন্তান পিতৃ হারা হয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের কান্না এই তথা কথিত স্বঘোষিত সুশীল সমাজের কানে পৌঁছবে না। মনে পড়ছে আপনাদের গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সন্তানের সামনে বাবা মা কে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। পিতৃ মাতৃ হারা সেই সন্তান যখন লুকিয়ে বেড়িয়েছে। বাবা মায়ের লাশ পর্যন্ত দিতে চায় নি তখন ঐ সুশীল সমাজের কষ্ট হয় নি। কারণ জানিনা কেন প্রতিবাদ করেন নি।আর কাকের ছবি আঁকবেন না শকুনের ছবি আমি জানি আপনাদের সেই মেরুদন্ড নেই। আমি শুধু জানি মানুষের অকাল মৃত্যু কষ্ট দায়ক। আসুন যদি সত্যি মানুষ হন মানুষের মৃত্যু যদি ব্যথা দেয় সে পুলিশ হোক সাধারণ মানুষ হোক মাষ্টার মশায় হন। শাসক দলের হোন আর বিরোধী দলের। যে কেউ হন সত্যি কার মানুষ হলে আসুন প্রতিবাদ করি। যে আই পি এস এরাজ্যেও সর্বোচ্চ পদে আছেন তাদের কান পর্যন্ত যেন পৌঁছে যায় মানুষের বুক ফাটা আর্তনাদ।

No comments:

Post a Comment