Friday, 21 September 2018

সোনার গদা । ( ৪র্থ অংশ)

মেজ ছেলে পরিতোষ কে চিঠি পাঠানো হলো। ছুটি নিয়ে দু দিনের জন্য বাড়ি আসার জন্যে।
বিহারের জামসেদপুরে পৌঁছতে পাঁচ দিন সময় লাগল। চিঠি পৌঁছানোর পর, পরিতোষ বাবু কর্তৃপক্ষের কাছে বাবার লেখা চিঠি দেখিয়ে ছুটি নিলেন। আরো দুদিন পর বাড়ি এলেন।বাড়িতে এসে রেষ্ট নিয়ে দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে বাবার সঙ্গে চিঠি নিয়ে কথা বলার জন্য, বাবার ঘরে গেলেন তখন, ভবতোষ বাবু বললেন "মেজ খোকা তুই হাতে সময় নিয়ে এসেছিস?" এবারে অনেক দিন ছুটি নেওয়া হয়নি। ছুটি বাড়ানো যাবে, ছোট নাতি বলে উঠল, আমি কিন্তু এখন যাচ্ছি না। ভবতোষ :- "  না না তোমায় এখন কোথায়াও যেতে হবে না।  তুমি যাও খেলা করো, আমরা একটু কথা বলি।" কারণ ঘরে তখন আগে থেকে বসে  আছেন সত্যেন, রজত, এবং বাবার ছোট বেলার বন্ধু কেশব বাবু। ভবতোষ বাবু পরিতোষ বাবুর সঙ্গে সত্যেন ও রজতের পরিচয় করিয়ে দিলেন, এবং পূজোর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা বললেন। সব শুনে পরিতোষ বাবু বললেন, এবার পূজোয় ছুটি নিতে পারিনি তাই আসতে পারিনি। এত বড়ো ঘটনা আমি জানতে পারলাম না। সত্যি খুব খুব খারাপ খবর, ঠাকুরের জিনিস চুরি হয়ে গেল, কেউ ধরা পড়েনি? ভবতোষ বাবু, "  না না তেমন কিছু হয় নি। আজ আট মাসের উপর হলো। সত্যেন বাবু বললেন " এবার আমি একটু বলি, পরিতোষ বাবু আমরা একটা সূত্র খোঁজার চেষ্টা করছি, সেই জন্য আপনাকে চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে। আপনি এসে ভাল করেছেন। আপনার বাবার কথা অনুযায়ী, আপনি ঠাকুর ঘর সারাবার জন্য হিন্দু রাজ মিস্ত্রি ঠিক করে দিয়ে ছিলেন।"    " হ্যাঁ একদম ঠিক কথা, কিন্তু কি হয়েছে? "   সত্যেন.   " আমরা দেখেছি কাজ টা যে ভাবে করা হয়েছে, অর্থাৎ সিন্দুক টি যেভাবে দেওয়াল ভেঙে বার করে আনা হয়েছে সে কাজ টি কোন পেশাদার রাজমিস্ত্র ছাড়া সম্ভব নয়। " পরিতোষ " দেখুন সত্যেন বাবু যখন কাজ হচ্ছিল তখন ঐ ঘরে কাউকে যেতে দেওয়া হয় নি। কি বাবামশাই আমি ঠিক বলেছি? হ্যাঁ তুমি ঠিক বলেছ তবে আমরা তো আর সব সময় ওখানে থাক তে পারিনি তাই যদি, কথা কেড়ে নিয়ে পরিতোষ বাবু বলেন, " সে কী করে হবে ঘর তো চাবি দেওয়া ছিলো। পূরণো চাবি ওকে নষ্ট করতে কতক্ষণ! কেশব বাবু বলেন, " কে বলতে পারে তখন কিছু করে নি, সুযোগ বুঝে কাজ টি করেছে। তুমি কাদের ঠিক করে দিয়ে ছিলে। "   পরিতোষ, " ঠিক মনে নেই তবে এখান কার লোক ছিল,।".   সত্যেন," একজনের নামও মনে নেই, ভেবে দেখুন কারা কোথায় বাড়ি, কোন জায়গা থেকে কাজে আসত?"
পরিতোষ " অত মনে নেই, তবে ওদের মধ্যে একজন ছিল হরিপদ পদবী ঘোষ না সাহা। সত্যেন,  - " বাড়ি কী কাছাকাছি কোথাও ছিল?" পরিতোষ, -"  সকলের বাড়ি ছিল পাশের গ্রামে।" সত্যেন, -"  চুরি টা আট মাস আগে, আর সারাই হয়েছিল ধরে নিলাম এক বছর আগে।" ভবতোষ " ঐ রকম হবে এক বছর এক মাস কি দু মাস।" সত্যেন - "তাহলে কেশব বাবু এবার আপনার কাজ, আপনি পাশের গ্রামে গিয়ে খোঁজ নেবেন হরিপদ কোথায় থাকেন।" কেশব "সেই আমাকে দ্বায়িত্ব দিচ্ছেন, আমাকে এখানের সবাই চেনে আমি খোঁজ নিলে কেউ কিছু বলবে না। " সত্যেন -" আপনি খোঁজ নেবেন না, বলবেন জমিদার বাড়িতে কাজ আছে কাজ করে দিতে হবে। তাহলে কাল থেকে কাজে নেমে পড়ুন। " কেশব - -" ভবতোষ কী কাজের কথা বলব? "   সত্যেন -" বলবেন ভেতর বাড়িতে একটা মহল ভেঙে নতুন করে হবে। "    কেশব   " কিরে ভবতোষ ঐ কথা বলব তো। "   ভবতোষ     "হ্যাঁ তাই বল "  পাশে বড়ো ছেলে ছিল সে বাবা মশাই সত্যিই ভেতরে অংশে অনেক খারাপ হয়ে গেছে।"   
সত্যেন - " তাহলে ঐ কথা রইল আপনি আজ থেকে বেড়িয়ে পরুন ।". কেশব.  " আজ থেকে!"
ভবতোষ - "  এখন তো বেলা আছে, ঘুরে আসা যায়। চল দুজনে যাই।"  সত্যেন - " ভবতোষ আপনিও যাবেন!" ভবতোষ - " কেন আমি সঙ্গে গেলে বিষয় টা ভালো হতো। ". সত্যেন -"  না না আপনি গিয়ে মনে করুন খুঁজে পেলেন উত্তেজনা বশে কিছু বলে ফেললেন। বিষয় টা খারাপের দিকে যাবে। বরং মহিতোষ বাবু যান। " 

No comments:

Post a Comment