Monday, 29 October 2018

শিশু আজ শিশু কে খুন করছে।

ছবি টি ডেইলি হান্ট নিউজ ওয়েব সাইট থেকে নেওয়া হয়েছে।
প্রায় প্রতিদিনই অন লাইন নিউজ পোর্টাল গুলো খুললেই খবর থাকে শিশুরা শিশুর উপর অত্যাচার করছে। আবার কোন পাষণ্ড শিশুর উপর  অঅত্যাচার করছে।  যেমন উপরের ছবিটি দীল্লির । আজকের নিউজ পোর্টালে বেড়িয়ে ছিল ।শিশু টি কে কে বা কারা মেরে দিয়েছে। আবার আরেকটা নিউজ পোর্টালে Zee 24 ঘন্টায় বেড়িয়ে ছিল। পশ্চিমবঙ্গের একটি গ্রামে ফিরহাদ নামের একটি বাচ্ছা ছেলেকে কাল থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে তাকে খালের জল থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে । আরো লেখা ছিলো তার সম বয়সি বন্ধু তাকে বাড়িতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছিল। তার সাইকেল সহ জুতো খালের ধারে পাওয়া গেছে। কেন এই সব প্রবনতা তৈরী হচ্ছে। বাচ্ছারাও অপরাধ করে ফেলছে? বাংলায় একটা প্রবাদ আছে বাচ্ছারা শেখে বড়ো দের দেখে, বড়োরা এমন কোনো কথা বলছেন বা কাজ করছেন, শিশু মনে প্রভাব ফেলছে। আর সঙ্গে আছে বিভিন্ন গেম, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবর যেখানে খুনের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে। আর আছে নেট দুনিয়া ফেসবুক হোয়াটস এ্যাপে মেসেজ থাকছে, আর ইউ টিউবে সে তো কথাই নেই। যা দেখতে চাইবেন তাই পাবেন ইউটিউবে, শুধু শুধু ভিউ বাড়বে বলে খারাপ ছবি কথা বলছেন লিখেছেন। বেশি আছে দেখলাম বাংলা দেশের।
শিশু মন অনুকরণ প্রিয় তারা যা দেখে তাই শেখে, যা শোনে সেটা মনে রেখে দেয়। অনেকেই ভাবছেন শিশু শিশু অবস্থায় যা শুনল বা দেখল বেশি দিন মনে রাখতে পারে না। এসব ধারণা কিন্তু ভুল ছোট বেলায় শোনা সমস্ত কথার মধ্যে যেটা তার মনে দাগ কাটে সে সেটা সে দীর্ঘ দিন মনে রাখতে পারে। অনেক কথা বা ঘটনা সারা জীবন মনে রাখে। মহাভারতের অভিমুন্যুর কথা যে মাতৃ গর্ভে থাকা কালীন, শুনে ছিল চক্রবূহে কী করে ঢুকতে হয়, কিন্তু বেড়িয়ে আসার কথা শুনতে পাননি কারণ তার মা ঘুমিয়ে পড়ে ছিলো।
আর এখন এই সব নেট দুনিয়াতে বিভিন্ন ভাবে ভিডিও ফুটেজ খবর প্রতিনিয়ত আপলোড হয়েছে। সেখানে রক্ত মাখা ছুরি, খুন হওয়া বডির ছবি, আর গলায় ফাঁস দেওয়া দেহের ছবি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিনিয়ত আসছে । অনেকেই এসব দৃশ্য বাচ্ছা দের থেকে লুকিয়ে রাখতে পারে না। তাই অনলাইন নিউজ পোর্টালে ঐসব ছবি দেওয়ার আগে ভেবে দেখুন। শিশু মন কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, আপনি আপনার চ্যানেলের ভিউ বাড়বে বলে ধরে নিলাম ঐ সব ছবি দিচ্ছেন। কিন্তু শিশু মন কীভাবে নেবে ভাবা যাবে না। আর অনলাইন গেম খেলতে দেওয়া উচিত কিনা ভেবে দেখুন। আপনি মোবাইল ফোন থেকে বাচ্চা দের দূরে রাখুন নিজের মোবাইল এ গেম এ্যাপ ডাউনলোড করতে দিতে পারেন যে সব গেমের কোনো খুন খারাপি নেই। আর অনলাইন নিউজ পোর্টালে ছবি গুলো বন্ধ করে দিন ইউটিউবে অনেক শিক্ষা মুলক চ্যানেল আছে। সে গুলো দেখতে দিন তাদের সামনে খারাপ কথা খারাপ আলোচনা না করাই ভালো। শিশু কে সুস্থ ভাবে মানুষ হলে অনেক কিছু নিজেদের ত্যাগ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে অশান্তি ঝগড়া ঝাঁটি, অভাব প্রত্যেক বাড়িতে আছে কারণ আজকের দিনে সাধারণ গরীব মানুষের উপায় কমেছে। বর্তমানে রাজ্যে অর্থ নৈতিক জরুরী অবস্থা চলছে, মানুষের আয় কমেছে ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। বিশেষ করে চাষিদের, যে হারে ফসল ফলাতে খরচ তাতে করে ফসলের দাম নেই।শিশু রা আমাদের ভবিষ্যৎ তাদের কথা ভেবে অনেক কিছু সহ্য করে বেঁচে থাকতে হবে। শিশু ভীষণ অনুকরণ প্রিয়। তাই এই শিশু দের সামনে এমন কোনো কথা বলা বা কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে । সমাজের খারাপ মানুষের কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে যেতে হবে। তাকে বোঝানো দরকার কিন্তু মারধর বন্ধ করে নিজের রাগ কেকে সংযত করে রাখতে। কথায় বলে রাগ চণ্ডাল, মানুষ যদি তার রাগ কন্ট্রোল করতে পারে তবে সে ঐ খারাপ কাজ করতে যাবে না। অনেক ভালো কাজ করা যাবে। নিজেকে বশে রাখতে রাগ হলে একটু দূরে সরে যান ইষ্ট দেবতার নাম করুন। বিশ্বের অনেক বড়ো বড়ো মানুষ নিজেদের রাগ কে বশে রেখে অনেক ভালো কাজ করে গেছেন। শেষ করব যৌবনের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ছাড় পত্র কবিতার কয়েক টি লাইন দিয়ে।" চলে যাব তবু যত ক্ষণ দেহে আছে প্রাণ পনে দু হাতে সরাব জঞ্জাল। এবিশ্ব কে এ শিশুর বাস যোগ্য করে যাব আমি। নবজাতকের কাছে আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।" প্রতিটি শিশুর সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে, তাদের ঐ অধিকার কে সুনিশ্চিত করতে হবে আমাদের। আমরাই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দেব। আজ থেকে এই শপথ নিতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে এই প্রতিজ্ঞা করি আজ থেকে একটি শিশুও যেন অত্যাচারিত না হয়।

No comments:

Post a Comment