Monday, 8 October 2018

পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা

এর আগে একটা কার্টুন দিয়েছি, যদিও অপরের তৈরি।
এবং লিখেছি বর্তমান দিনে শিক্ষকের ভূমিকা। আজ অন্য কোন বিষয়ে নয় বরং পশ্চিম বঙ্গের তথা ভারতের সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার কী হাল দেখে নেওয়া যাক । দেখুন আমি নিজে একজন শিক্ষক , তেমনি বিভিন্ন ধরনের পত্র পত্রিকা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবর পড়ি ও দেখি। তাই সে সব অনেক কথা ঐ সব খবরে বলা থাকে না সেই সব না বলা কথা বা বাস্তবতা লেখার চেষ্টা করি। যেমন একটা খবর কদিন ঘোরা ফেরা করছে বা লেখা হচ্ছে গ্রামের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কম তাই সে গুলো সরকারের একটি অর্ডার যেখানে বলা হয়েছে ত্রিশের নিচে ছাত্র সেই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক দের কী করা হবে তাও ঐ আদেশে বলা হয়েছে। আর কিছু কিছু নতুন অনলাইন খবরের পোর্টাল এই সব খবর সব দোষ শিক্ষকের সেই জন্যই স্কুল উঠে যাবে। অনেকেই আবার স্কুল বানান লিখেছেন ইস্কুল সেব না হয় বাদ দিলাম। কেন ছাত্র ভর্তি হয় না, তার একটা কারণ আর টি ই এ্যাক্ট কারণ ভর্তির বয়স হতে হবে ছয় বছর বয়সে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হবে। আর জণ্ম তারিখ যদি জানুয়ারি দু তারিখ হয় তবে সে আর সেই বছর ভর্তি হতে পারবে না। ধরা যাক যারা এ বছর প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হবে তাদের জণ্ম তারিখ হবে, ২০১২ সালের একত্রিশে ডিসেম্বর। জানুয়ারি ২০১৪ সালের ২ রা জানুয়ারি হলে হবে না । আবার বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে যারা সি বি এস ই দ্বারা পরিচালিত তাদের ক্ষেত্রে তিন মাসের ছাড় আবার কেজি ওয়ান বা ক্রেশ থেকে  স্কুল চালাতে পারে। সিলেবাস বোর্ডের নির্দিষ্ট হলেও তারা নিজেদের মতো বই পড়াতে পারে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক বলে একটা শ্রেণী আছে যে খানে পাঁচ বছর বয়সে ভর্তি করা যায়। কিন্তু বয়স পাঁচ বছরের এক দিন কম হলে ছাত্র তথা অভিভাবকদের. সমস্যা হচ্ছে । এরা আগে প্রথম শ্রেণীতে পডত বই ছিল বাংলা অঙ্ক ইংরেজি যথা কিশলয় নব গনিত মুকুল ও আমার ইংরেজি। আর এখন প্রাক প্রাথমিকে বই হচ্ছে কুটুম কাটাম ও মজারু এবং কিছু সংখ্যা কার্ড বর্ণ কার্ড আরও কিছু কার্ড। সব থেকে বড়ো এদের কোনো পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। অন্য বই পড়ানো যাবে না, তাহলে শিক্ষকের ফাঁসি দিয়ে দেওয়া হবে । কারণ যে দল ক্ষমতায় তারা মানুষ খুন করতে ভালো পারে ।
আর ওয়ান টু এর আমার বই, সব সাড়ে তিনশো পাতার মহাভারত। এক মাস যায়না বাইণ্ডিং খুলে চলে যায়। আমার বই এ শেখানোর মতো কিছু নেই , না আছে অঙ্ক টি ভালো করে। না আছে ইংরেজি অথচ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ইংরেজি গ্রামের অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রীরা পড়তে পারে না । পোশাক দিচ্ছেন প্রাক প্রাথমিক বাদ, জুতো দিচ্ছেন তাতেও বাদ। আরো একটা কথা না বললেই নয় কারণ অঙ্ক কষে কিছু শেখা যায় না। কারণ ধারা বাহিকতা নেই, আবার বই এর যেমন কষা আছে সেই ভাবে কষতে হবে। বাম আমলে ক্যাডার মাষ্টার ছিল তারা বই এ যা লেখা থাকতো তাই করত ভুল থাকলে তাই করানো হতো। এক রকম বিয়োগ যা ভেঙে মাথায় লিখে করতে হতো। এখন আছে, ভাগ বিশেষ এক প্রকার বিয়োগের সংক্ষিপ্ত রূপ এবার ভাগে সময় বিয়োগ করতে অসুবিধা হয়। সেই মহান বাম আমলের নিয়োজিত শিক্ষকের ভাষায় শিক্ষকের দোষ। এখন সেই নিয়ম আছে, কিন্তু যে নিয়ম কেবল মাত্র দিন মাস বছর ও ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড ক্ষেত্রে কাজে লাগবে সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে সাধারণ বিয়োগের ক্ষেত্রে। সাধারণ বিয়োগ সমান সমান যোগ পদ্ধতিতে করা হয়েছে আগে। তাতে ভাগের অসুবিধা হয়নি। এবার বুঝে কেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র কমে গেছে। আমি একটি পরিসংখ্যান শুনেছি প্রায় আট লক্ষ ছেলে মেয়ে এই শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আছে এবং অন্যান্য আছে। আবার অনেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে ।অনেক কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় নি । বাড়ি অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ বলে ।কারণ পশ্চিমবঙ্গে অলিখিত অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বাজারে টাকার যোগান কম, মজুরি দশ বছর আগে যা ছিলো তাতে পাঁচ শতাংশ মজুরি বেড়েছে। কিন্তু খাদ্য দ্রব্যের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দু টাকা কিল চাল সঠিক লোক পায় না। সে তো আগেই বলেছি। আবার মাসে ত্রিশ কেজি চাল লাগে রেশনে দেওয়া হচ্ছে বড়ো জোর পনেরো কেজি। বাকি জিনিস পত্রের দাম ২০১০ সালে আলুর দাম ৯ টাকা ১০ টাকা একবার ষোল টাকা হয়ে ছিল আন্দোলনের চোট দেখে কে। আর এখন তিনি ক্ষমতায় কার ঘাড়ে কটা মাথা যে আন্দোলন করে। আলু এখন আঠারো ও চব্বিশ টাকা। আর মাঝ পথে স্কুল ছেড়ে টাকা উপার্জন করতে যাওয়ার মূল কারণ। যতই তুমি সংখ্যালঘু স্কলারশিপ দাও। সে তো বছরে হাজার টাকা, তাও আবেদন করেও টাকা মেলে না। আর এই অলিখিত অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থার জন্য দায়ী এই সরকার ও তার অর্থ মন্ত্রী। আর কারখানা তাড়ানো দল। কারণ মানুষের কাছে অর্থ পৌঁছে দেওয়ার একটা মাধ্যম ডিএ দেওয়া সেটা বন্ধ। কারণ ডি. এ. যার পুরো কথা হলো ডিয়ার্নেস এ্যালাউন্সে বাংলা মহার্ঘভাতা বা মূল্য বৃদ্ধি জনিত ভাতা। এই টাকা পেলে সব কর্মী পেলে সে টাকা টা বাড়িতে বা ব্যাঙ্কে রেখে দেবেন না। বাজারে জিনিস পত্র কিনবেন টাকা। বড্ড বেশি লিখে ফেলেছি আর নয়, আমি হয়তো কিছুটা হলেও বোঝাতে পেরেছি যে বিদ্যালয়ে ছাত্র কমে যাওয়ার পিছনে সরকারি নিয়ম দ্বায়ি। কারণ সরকার চাইছেন কারখানার মতো এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাক, লোক নিয়োগ করতে হবে না। (আর কী সকলে ভালো থাকুন আর আমার ব্লগ পড়ুন ও মন্তব্য লিখুন )

No comments:

Post a Comment